দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথমবারের মতো কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হলো টানেল। এই স্থপনা ঘিরে চীনের সাংহাই সিটির আদলে চট্টগ্রাম শহর ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ রূপ নেবে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের নামফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে বন্দর নগরীতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে পুরো নগরীকে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে; সাজানো হয়েছে ভিন্ন আমেজে। পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে চলছে সাজসজ্জার কাজ। সংস্কারের পাশাপাশি রঙ করা হচ্ছে সড়কগুলো।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর সেতৃ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টানেল নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, এরই মধ্যে টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে, যার বর্ণাঢ্য উদ্বোধন হবে আগামী শনিবার। টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারা প্রান্তে ইপিজেড মাঠে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেতুমন্ত্রী বলেন, টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে সাগর ও বিমানবন্দরেরও দূরত্ব কমে আসবে। অর্থনীতির গতিপথ আরও গতিশীল করতে এই টানেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চট্টগ্রাম শহরের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও আধুনিকায়ন করাই এই টানেল নির্মাণের অন্যতম কারণ। এতে বাঁচবে খরচ ও সময়।
প্রকল্প নথি বলছে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলকে আগলে রেখেছে যে কর্ণফুলী, তার বুক চিরে তৈরি হয়েছে ৩ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ।
এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৫ সালের ৩০জুন। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে সঙ্গে নিয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশে সরকার অর্থসহায়তা দেয় ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ও চায়না এক্সিম ব্যাংক থেকে সহায়তা নেওয়া হয় ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।