সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে আরাফাত আমিন তমাল নামে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে। সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। সোমবার মেডিক্যাল কলেজের একাডেমি ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে পরীক্ষা চলছিল। এ সময় আমার ছেলের বন্ধু আক্তারুজ্জামান বিকাল ৪টার দিকে ফোন করে বলে যে, আপনি দ্রুত সিরাজগঞ্জ চলে আসেন। তমাল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে বগুড়া থেকে রওনা হয়ে সিরাজগঞ্জ এসে আমার ছেলেকে সিরাজগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সংকটাপূর্ণ অবস্থায় দেখি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলে তমালের ক্লাসমেটসহ তার সহপাঠীরা জানান, ওই শিক্ষক কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। তিনি সর্বদাই শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিনি সব সময় ব্যাগে অস্ত্র নিয়ে এসে ক্লাসে টেবিলের ওপর রেখে লেকচার দেন। ছাত্র-ছাত্রীরা এ বিষয়ে আপত্তি তুললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। সোমবার পরীক্ষা চলাকালীন বিকাল ৩টার দিকে ওই শিক্ষক হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির একপর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার করার উদ্দেশে গুলি করলে গুলিটি তার ডান পায়ের ঊরুর ওপরের অংশ লেগে গুরুতর জখম হয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে ওই শিক্ষক অস্ত্র উঁচিয়ে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে যে, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলবো। পরে তার বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে এসে ওই শিক্ষককে ও অস্ত্রসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। তার (শিক্ষক) কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে।’