এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার কারণ এখনও পুলিশের কাছে অস্পষ্ট ঠেকছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন আর রশীদ। তিনি বলেছেন, “তাকে কী উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছে, এটা এখনও স্পষ্ট নয়। টাকা লেনদেনসহ যেসব বিষয় শোনা যাচ্ছে- গুরুত্ব সহকারে সবকিছু খতিয়ে দেখছি।”
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় সন্দেহভাজন হিসেবে চলতি সপ্তাহের বুধবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পাহাড় থেকে ফয়সাল আলী সাজি ও মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদেরকে বিমানযোগে ঢাকায় আনা হয়।
ফয়সাল ও মোস্তাফিজুরের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, “এই দুইজনকে নিয়ে হত্যা মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী সাতজনই গ্রেপ্তার হলো।”
পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তার দুজন নিজেদের পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয় দিয়ে একটি কালী মন্দিরে অবস্থান করছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ বলেন, “কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনার হত্যার শিমুল ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সাতজন অংশ নেন। সবশেষ এই দুইজনসহ পাঁচজন বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হলেন। তারা হলেন- শিমুল ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া ও সেলেস্টি রহমান এবং সর্বশেষ বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া ফয়সাল ও মোস্তাফিজুর।”
এর বাইরে ভারতে কসাই জিহাদ হাওলাদার গ্রেপ্তার ও নেপালে সিয়াম আটক হন। সিয়ামকে পরে ভারতের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এমপি আনোয়ারুল আজিম হত্যার মূল হোতা আখতারুজ্জামান শাহীন ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, “তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি কালকাতা পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।”
গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। এই ঘটনায় কলকাতায় জিডি করেন তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাস। দুই দেশেই তদন্ত শুরু হয়। এরপর ২২ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এমপি আনারকে কলকাতার এক বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের খবরের দিনই তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন শেরেবাংলা নগর থানায় তার বাবাকে খুনের উদ্দেশে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন। অন্যদিকে কলকাতায় দায়ের করা হয় হত্যা মামলা।
কলকাতা পুলিশ হত্যা মামলা ও ঢাকার পুলিশ খুনের উদ্দেশে অপহরণ মামলার তদন্ত করছে। এই নিয়ে ঢাকা ও কলকাতা মিলে এখন পর্যন্ত নয়জন গ্রেপ্তার আছেন। এর মধ্যে দুজন রয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা।