অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভুল পথে চলছে দেশ, মনে করেন ৭০ ভাগ মানুষ : জরিপ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২৯, ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভুল পথে চলছে দেশ, মনে করেন ৭০ ভাগ মানুষ : জরিপ

৭০ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন যে দেশের অর্থনীতি ভুল দিকে এগোচ্ছে এবং ৪৮ শতাংশ মনে করেন, দেশের রাজনীতি ভুল পথে চলছে।

এশিয়া ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এক যৌথ জরিপের ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এশিয়া ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে চলেছে কিনা- সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। এই জরিপ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ সামাজিকভাবে সঠিক পথে চলছে বলে মনে করেন দেশের ৫৮ শতাংশ মানুষ, আর ৩৯ শতাংশ মনে করে বাংলাদেশ সামাজিকভাবে ভুল পথে চলছে। দেশের ৩৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন বাংলাদেশের রাজনীতি সঠিক পথে চলছে, আর ৪৮ শতাংশ মনে করেন এ ক্ষেত্রে দেশ ভুল পথে চলছে। সমীক্ষায় মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ঠিক দিকেই এগোচ্ছে, আর ৭০ শতাংশ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ভুল দিকে চলছে।

২০১৯ সালের তুলনায় এবারের সমীক্ষার তিনটি দিকেই মানুষের ইতিবাচক ধারণা অপেক্ষাকৃত কম যা সামগ্রিকভাবে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক মূল্যায়নের বহিঃপ্রকাশ। অর্থনৈতিক অবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশের নিম্ন আয় গোষ্ঠীর ইতিবাচকতা উচ্চ আয়-গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি কমেছে। ৫,০০০ টাকা বা তার চেয়ে কম আয় করে এমন ৮৪ শতাংশ মানুষ ২০১৯ সালে জানিয়েছিল, তাদের মতে, দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে। ২০২২ সালে মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে এই উত্তর পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, ৫২ শতাংশ মানুষ আগের ইতিবাচক অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। তুলনায় দেখা যায়, ৪০,০০০-৫০,০০০ হাজার টাকা মাসিক আয় যাদের, তাদের মাঝে এই পরিবর্তনের হার ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ ২০১৯ সালে ৫৮ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন আর ২০২২ সালে এ ইতিবাচক ধারণা করেন ২৭ শতাংশ মানুষ। জরিপের ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাদের মতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ সম্পর্কে মোট ৮৪ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে, এই সমস্যা তাদের জীবন ও জীবিকার ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। ব্যবসায়িক মন্দা, বেকারত্ব, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইত্যাদি সমস্যার কথাও জরিপে উঠে এসেছে।

২০২২ সালে জরিপে অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের কাছে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাদের প্রায় ৫৪ শতাংশ জানান, বাংলাদেশে এমন একটি পরিবেশ বিদ্যমান যেখানে একদল রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থায় শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। ২০১৯ সালে এই একই মত পোষণ করেছিল ৭২ শতাংশ জনগণ। লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, ২০১৯ সালে ১১ শতাংশ মানুষ ভাবত, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব রাজনীতিতে নেতিবাচক। ২০২২ সালে এসে এমনটি ভাবছে ৩৪ শতাংশ মানুষ।

জরিপটি আরও বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি কমে যাচ্ছে। নিজেদের মাঝে শরণার্থীদের স্বাগত জানাবে- জনমনে এমন মনোভাব ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০১৮ সালে ৩৪ শতাংশ, সেখান থেকে ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ ও ২০২২ সালে ১৩ শতাংশ মানুষ শরণার্থীদের সম্পর্কে ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। ৪৪ শতাংশ মানুষ মনে করে, সরকার শরণার্থীদের জন্য যথেষ্ট করেছে ও করছে।

জরিপে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ৭২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ৪৭ শতাংশ মানুষ সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারকে কৃতিত্ব দিয়েছেন ২৮ শতাংশ মানুষ।

Link copied!