শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভের’ গ্রাফিতি মোছায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪, ০১:৫৯ পিএম

শেখ হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভের’ গ্রাফিতি মোছায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষককেন্দ্র (টিএসসি)-সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি (‘ঘৃণাস্তম্ভ’) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে মুছে ফেলা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে টিএসসিসংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাশের ‘ঘৃণাস্তম্ভের’ সামনে জড়ো হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন। খবর প্রথম আলো।

গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। ‘ঘৃণাস্তম্ভে’ থাকা গ্রাফিতিটি অর্ধেকটা মুছে ফেলা হয়েছিল। পরে ‘ঘৃণাস্তম্ভে’ শেখ হাসিনার আরেকটি গ্রাফিতি আঁকা হয়।

এই ঘটনায় প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। তিনি দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রক্টর বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা যখন মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি পাঠায়, তখন এখানে থাকা দুটি ছবিও (শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা) চলে যায়। তাই তারা (মন্ত্রণালয়) প্রশ্ন তোলেন, এখনো এই দুজনের ছবি থাকবে কেন? তাঁকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট অফিসারকে বলেন। স্টেট অফিসার তখন মেট্রোরেলকে বলে দেন। তাদের (মেট্রোরেল) পক্ষ থেকে লোক পাঠিয়ে এটা মুছে ফেলা হচ্ছিল।

প্রক্টরের এমন মন্তব্যে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এটা যে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’, তা কি প্রক্টর জানতেন না—এমন প্রশ্ন করেন শিক্ষার্থীরা।

তখন স্লোগান ওঠে, ‘বাহ্ প্রক্টর চমৎকার, স্বৈরাচারের পাহারাদার’, ‘খুনি হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার-সাবধান’, ‘লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘খুনির ছবি মুছল কারা, স্বৈরাচারের দোসর তারা’; ‘জুলাইয়ের চেতনা বৃথা যেতে দেব না’, ‘ঘৃণাস্তম্ভ মুছল কেন, প্রক্টর জবাব চাই’।

উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তখন প্রক্টর ও স্টেট অফিসার ফাতেমা বিনতে মোস্তফার পদত্যাগ দাবি করেন।

শিক্ষার্থীদের এমন প্রতিক্রিয়ায় ঘটনাস্থলে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভুল তো আমাদেরও হতে পারে।’

প্রক্টর বলেন, প্রয়োজনে এই ভুলের জন্য তিনি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্ষমা চাইবেন। তবু যেন শিক্ষার্থীরা তাকে ভুল না বোঝেন। এটা ষড়যন্ত্র নয়, ভুল।

প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি “ঘৃণাস্তম্ভ” হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এটার উদ্বোধন করবেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের গ্রাফিতি সংরক্ষণ করবে। কেউ মুছে ফেললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!