সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত সোয়া ১১টার দিকে আটক হন তিনি। মানিক আটক হওয়ার পর তাকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল।
রাত ১টা ৩৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে রাসেল লিখেছেন, “আমাদের চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য (মানিক) পেয়েছিল অঢেল টাকা। তার ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। অনেক মানসিক কষ্ট পেয়েছিলাম এই লোকটার জন্য। কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। যেদিন সব দেনা পরিশোধ করব সেদিন বলব। এতটুকু বলতে পারি পৃথিবীর কোনও রাষ্ট্রে যেন আল্লাহ এর মত কাউকে না পাঠায়।”
অবশ্য রাসেল তার ফেসবুক পোস্টে সরাসরি বিচারপতি মানিকের নাম উল্লেখ না করলেও তার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। এই স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে পৃথক এক পোস্টে মানিকের আটক হওয়ার ছবি শেয়ার করেছিলেন তিনি।
২০১৮ সালে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মোহাম্মদ রাসেল। বিভিন্ন লোভনীয় অফারে পণ্য বিক্রির জন্য জনপ্রিয়তা পেলেও অনেক সমালোচনাও সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে নানারকম ডিসকাউন্ট অফারের কথা বলে অগ্রীম টাকা নিয়েও যথাসময়ে পণ্য ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এক গ্রাহকের দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন। পরে বন্ধ হয়ে যায় ইভ্যালি। এতে লাখ-লাখ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
পরে আওয়ামী লীগ সরকার একটি বোর্ড গঠন করে ইভ্যালি পরিচালনার উদ্যোগ নেয়, যেখানে বিচারপতি মানিককে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে বসানো হয় সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলনকে। মিলনের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি বেশ ইতিবাচক সাড়া জাগায়।
বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিককে ‘কালো প্রাণী’ আখ্যা দিয়ে মোহাম্মদ রাসেল লিখেছেন, “আমি নাকি ৪৮ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিলাম। আল্লাহ এমন প্রাণী আর পৃথিবীতে না পাঠাক। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। এটার চেয়েও বড় কথা ছিল (এবারের আন্দোলনে) সব ছাত্র নাকি রাজাকার।”
রাসেল আরও দাবি করেছেন, মানিকের কারণে ইভ্যালির গ্রাহকদের ১২ কোটিরও বেশি পণ্য নষ্ট হয়েছিল।