আগস্ট ২২, ২০২৩, ০৮:৪৯ পিএম
ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি বিড়ালের মালিকানা নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ পারিবারিকভাবে সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেল অভিযোগ।
জানা গেছে, পাঁচ মাস আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে একটি অসুস্থ বিড়াল ছানাকে নিয়েছিলেন রিজিয়া বেগম। বিড়াল ছানাটিকে যত্ন করে বড় করেন তিনি। নাম রাখেন ‘লিওন’। দিন বাড়তে থাকে, লিওনের চঞ্চলতা ও দুষ্টুমিও বাড়তে থাকে। বিড়ালটি হয়ে যায় রিজিয়া বেগমের পরিবারেরই অংশ। তবে আকস্মিকভাবে লিওনের মালিকানার দাবি তোলেন প্রতিবেশী মো. অনিক। অনিক ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কনস্টেবল। অসুস্থ বিড়ালকে দিয়ে দেওয়ার পর আবার নিজের কাছে নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলায় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। পারিবারিকভাবে মীমাংসা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আইজিপির কাছে অভিযোগ করেন বিড়ালের বর্তমান লালন পালনকারী রিজিয়া বেগম। প্রতিকার না মেলায় পরে ১৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগে রিজিয়া বেগম বলেন, গত পাঁচ মাস আগে অনিকের শাশুড়ি তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের টেকেরহাট থেকে ২০-২১ দিন বয়স্ক একটি বিড়াল ছানা ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। ৪-৫ দিন ছানাটি রাখার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমি ও পায়খানা করায় বিড়ালটি রাস্তায় ফেলে দিতে ভবনের নিচে যেতে চান কনস্টেবল অনিকের শাশুড়ি। এসময় রিজিয়া বেগম তার কাছ থেকে বিড়ালটি চেয়ে নেন। ওই নারীও কোনো রকম দাবি ছাড়া ছানাটি হস্তান্তর করেন রিজিয়ার কাছে।
অভিযোগে রিজিয়া আরও উল্লেখ করেন, তার বাসায় আরেকটি বিড়াল পোষা ছিল, যা কয়েকদিন আগে মারা যায়। তাই বিড়াল ছানা দেখে তিনি নিতে আগ্রহী হন। এরপর তাকে বাসায় আনেন রিজিয়া। তাকে লালনপালন করতে থাকেন এবং নাম রাখেন ‘লিওন’। লিওনকে নিয়ে তিনি মাঝে মধ্যে ধোলাইপাড় পশু হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। বিড়ালের বাচ্চাটি নিজের সন্তানের মতো আদর করে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তোলেন।
অভিযোগে রিজিয়া বলেন, এরমধ্যে চার-পাঁচ মাস অতিবাহিত হলে হঠাৎ আমার লিওনকে পুলিশ কনস্টেবল মো. অনিকের স্ত্রী তাদের দিয়ে দিতে বলেন। বিড়ালটি দিতে না চাইলে অনিক গ্রাম থেকে তার শাশুড়ি ও তিন শ্যালিকাকে নিয়ে আসেন আমার সঙ্গে ঝগড়া করার জন্য। এরই মধ্যে তার শাশুড়ি ও শ্যালিকারা গ্রাম থেকে এসে আমার কাছে বিড়াল চান এবং বিভিন্ন সময় ঝগড়া করেন। এসময় পুলিশ কনস্টেবল অনিক আমাকে ভয়ভীতি দেখান। আমি বিড়ালটি তাদের না দিলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেন। তিনি আমাকে কয়েকদিন সময় দিয়ে আলটিমেটাম দেন।
যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. অনিক বলেন, আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি দপ্তরে অভিযোগ দিলেও আমি কারও বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করিনি। আমার বিরুদ্ধে যে কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। তবে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। আমার এ বিষয়টি নিয়ে ঢাকা জেলার এসপি নিজেই তদন্ত করছেন।
তিনি বলেন, রিজিয়া বেগম নিজেই বলছেন, ভুল বোঝাবুঝিতে তিনি অভিযোগ দিয়েছিলেন। আমি নিজেও কোনো ঝামেলা পছন্দ করি না। ঝামেলা যাতে না হয় সেজন্য বাসা পরিবর্তন করেছি।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা অভিযোগ জানতে পেরেছি। অভিযোগের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিড়াল নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে আইনে এ বিষয়ে কি রয়েছে তা দেখা হবে।