আসামি ধরতে গিয়ে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিমের মৃত্যু হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়নের এরানদহ গ্রামের আলোচিত হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে ধরতে গিয়ে প্রাণ হারান তিনি।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে হাটিকুমরুল ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার স্বরস্বতী নদীতে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। মৃত রেজাউল করিম নওগাঁ জেলার পত্নিতলা উপজেলার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনমুল হক। তিনি বলেন, “রায়গঞ্জ থানার এসআই রেজাউল করিম আমাদের সলঙ্গা থানাধীন এলাকায় হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে ধরতে এসেছিলেন। পরে আসামিও নদীতে ঝাঁপ দেয়। আর রেজাউল করিমও নদীতে ঝাঁপ দেন। আসামি নদী সাঁতরে পালাতে সক্ষম হয়। তবে রেজাউল নদীতে ডুবে মারা যান। তার নামাজে জানাজা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর-রশিদ বলেন, “৫ জুলাই রায়গঞ্জ থানায় একটি দস্যুতার মামলা হয়। এই মামলা তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত আসামি নজরুলকে ধরতে রায়গঞ্জ থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আসামি নজরুল পুলিশকে দেখে দৌঁড়ে স্বরস্বতী নদীতে ঝাঁপ দেয়। আসামিকে ধরতে এসআই রেজাউল করিমও নদীতে ঝাঁপ দেন। নদী সাঁতরে আসামি নজরুল পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এসআই রেজাউল করিম নদীতে ডুবে প্রাণ হারান। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তা খোঁজাখুঁজি করে এসআই রেজাউল করিমকে উদ্ধার করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক রেজাউল করিমকে মৃত ঘোষণা করেন।”
সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, “উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম দস্যুতা মামলার প্রধান আসামির অবস্থান শনাক্ত করে ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে রাধানগর এলাকায় যায়। পুলিশকে দেখে আসামি নজরুল ইসলাম দৌঁড়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। একই সময় উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিমও ঝাঁপ দেন। কিন্তু আসামি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে রেজাউল করিম নদী তীরবর্তী স্থানে এসে দাঁড়ানোর পর আবারও নদীতে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ নুর ইসলাম বাবু বলেন, “নদীতে ডুবে পুলিশ সদস্য নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেখানে অভিযান পরিচালনা করে এসআই রেজাউলকে উদ্ধার করি এবং শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেলে নিয়ে যাই। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”