প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে বিদেশি একটি দেশ খ্রিস্টান রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়। এবার এই অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ জুন) সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে তাকে প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, “বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি দাবি করেছেন, শ্বেতাঙ্গ একজন লোক তাকে প্রস্তাব দিয়েছিল- যদি বাইরের কোনো দেশকে বিমান ঘাঁটি করার সুযোগ দেন তবে বিনা চাপে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আরেকটি পূর্ব তিমুরে পরিণত করা এবং বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি বানিয়ে বাংলাদেশের ও মিয়ানমারের অংশ নিয়ে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র গড়ে তোলার ষড়যন্ত্র চলছে। আপনি যেখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং আইনের শাসন ও দুর্নীতি দমনের দাবি করছেন; শেখ হাসিনা কি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে খুব বেশি তীর ছুড়ছেন?”
এই প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আমি ঠিক নিশ্চিত নই যে, এসব মন্তব্য কাদের ইঙ্গিত করে করা হয়েছে। তবে এটি যদি যুক্তরাষ্ট্র হয়- তবে আমি বলবো মন্তব্য সঠিক নয়।”
একই সময় ইউনূসকে নিয়েও প্রশ্নের জবাব দেন ম্যাথিউ মিলার। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি সপ্তাহের রোববার আদালত কক্ষে আসামিদের অন্ধকার ও লোহার খাঁচার মতো ঘরে প্রবেশ করে বলেছিলেন, তিনি তার অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ে আছেন। একইভাবে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি, আইনের শাসন ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে লাখ লাখ বাংলাদেশি তাদের অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ে আছে। আমরা দেখেছি, আপনি কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, যার মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে আছেন সাবেক সেনা প্রধান ও পুলিশ প্রধান। আপনি কি মনে করেন, গত বছর ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে এটা যথেষ্ট হবে? নাকি আপনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক-গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে আরও পদক্ষেপ বিবেচনা করবেন, যেমনটা আপনি আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন?”
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, “ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি যে, ড. ইউনূসকে হয়রানি ও ভয় দেখাতে বাংলাদেশের শ্রম আইনের অপব্যবহার হতে পারে। আপিল প্রক্রিয়া চলমান থাকায় ড. ইউনূসের জন্য একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করা অব্যাহত রাখবো।”