নভেম্বর ২০, ২০২২, ১২:৩২ এএম
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। ঝাড়ি ঝুড়ি খাটবে না। পুলিশ দিয়ে, আমলা দিয়ে রাতের অন্ধকারে সবকিছু পাল্টিয়ে দিবা, ইভিএম করবা ওটা হবে না। জনগণ তার ভোটে এবার দেখে নেবে। কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নেবে। সেই ভোট হতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা আবার নতুন করে খেলা শুরু করেছে। মামলা মামলা খেলা। কোন মামলা? গায়েবী মামলা। কোন কিছু ঘটেনি, তারপরও বলে দিল ওখানে নাশকতা ঘটেছে। সেই নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা কর্মীদের আসামি করা হয়। তারা জানেই না কোনো কিছু। ১৪ বছর ধরে তারা এভাবে এই দেশের মানুষের ওপরে অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোলায় আব্দুর রহিম নূরে আলম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান এবং মুন্সীগঞ্জে শাওনকে এই সরকারের পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী হত্যা করেছে। তারা মনে করছে আগের মতো হত্যা করে করলে সবকিছু থেমে থাকবে। থেমে থাকেনি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ বেশি জনসমাগমের মাধ্যমে সফল হচ্ছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা একটি নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন, আজ এ যুদ্ধ আপনাদের নতুন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের অধিকার ফিরে পাবার যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আপনাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবার। এই যুদ্ধ আপনাদের ভাতের অধিকার ফিরে পাওয়ার। সিলেটের ইতিহাস হচ্ছে যুদ্ধের ইতিহাস। আপনাদের ইতিহাস যুদ্ধে জয়ের ইতিহাস। আজকে সিলেটে যুদ্ধ শুরু হলো এই যুদ্ধে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।
তিনি বলেন, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সকল রাজনৈতিক দল মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান আমরা সকলে এক হয়ে যেভাবে ৭১ সালে লড়াই করেছিলাম সংগ্রাম করেছিলাম সেইভাবে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করব। জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করব।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা এর বিরোধিতা করবে তারা গণ শত্রু বলে ধিকৃত হবে। তাদের গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এটাই আমাদের এখন সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি।
সিলেটের এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ফজলুর রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা সিনা রুশদী লুনা, উপদেষ্টা ডা. এনামুল হক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হাসান জীবন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ সহ বিভাগের জেলা গুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।