এপ্রিল ৪, ২০২৩, ০৬:৩৯ পিএম
সম্প্রতি ঢাকায় ভ্রমণে আসা অস্ট্রেলিয়ান ইউটিউবার লুক ডামান্টের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকার রাস্তায় এক বৃদ্ধ তার কাছ থেকে অর্থ সাহায্য চাইছেন। লুক ডামান্ট তাকে চলে যেতে বললেও ওই বৃদ্ধ ছিলেন নাছোড়বান্দা। বৃদ্ধের ওই আচরণে বিরক্ত হয়ে লুক ডামান্ট সেই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন: ‘অ্যাভোয়েড দিস ম্যান ইন বাংলাদেশ।’অর্থাৎ, ‘বাংলাদেশে এই লোকটিকে এড়িয়ে চলুন।’
এ পর্যন্ত ঘটনা সবার জানা। তবে এই ইউটিবারের সাথে শুধু বাংলাদেশে নয় পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ইন্ডিয়াতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এবং সেগুলো তিনি ফিল্ম করে চ্যানেলে আপলোডও দিয়েছেন।
লুক ডামান্ট যে দেশেই যান সেখানেই এমন ঘটনার শিকার হন!
তার চ্যানেলে দেখা যায় পাকিস্তানে ধারণকৃত এক ভিডিও ব্লগে দেখা যাচ্ছে, তিনি একজন ঘোড়সওয়ারকে বিশ্বাস না করার কথা বলছেন। ভিডিওটি তিনি ২০২২ সালের মার্চে ধারণ করেন তিনি।
ওই বছর ২৩ শে অক্টোবর ইন্ডিয়ায় একজন পাখির খাদ্য বিক্রেতাকে এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। অন্যদিকে ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ এ মিশরে একজন ভুট্টায়ালাকে বিশ্বাস না করার কথা বলছেন।
এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি, একজন ইন্দোনেশিয়ানকে এড়িয়ে চলার কথা বলেন। এই প্রক্রিয়ায় তাঁর চ্যানেলের ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার দ্রুত বাড়তে থাকে। একইসাথে বেড়ে চলে তাঁর অনলাইন আয়ও।
লুক ডামান্টের বয়স সবেমাত্র ২৩ বছর। এই বয়সেই অস্ট্রেলিয়ান এই ইউটিউবার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের পাশাপাশি সেসব দেশের সংস্কৃতি নিয়ে ব্লগ করছেন।
ডামান্ট যে কৌশলে এই ব্লগিং করেন তাতে সফরকারী দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হলেও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে তাঁর লাভ হয়। যেমন তাঁর বাংলাদেশে ভ্রমনের ব্লগগুলোতে তেমন ভিউ নেই। কিন্তু যখনই তিনি প্রবীণ আব্দুল কালুর বিরুদ্ধে পোস্ট দিয়েছেন, তখনই তার চ্যানেলের ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার বেড়ে গেছে। ওই বৃদ্ধর সাথে হেনস্তার ভিডিওটিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে।
পুরো সোশ্যাল মিডিয়া এখনো তোলপাড় চলছে ওই ঘটনায়। এই ডামান্ট বাংলাদেশি জনপ্রিয় ট্রাভেল ব্লগার নাদির অন দ্য গো’র বন্ধু বলেও জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ভ্রমনে, ব্লগ চলাকালে আব্দুল কালু (৬০) নামের এক ব্যক্তির সাথে তাঁর কথা হয়, এক পর্যায়ে কালু তাঁকে সাহায্য করলেও পরে হুট করে তিনি তাঁর কাছ থেকে টাকা চান।
কালু এক পর্যায়ে ডামান্টের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা চেয়ে বলতে থাকেন, দুদিন ধরে তাঁর পরিবার না খেয়ে আছে! ডামান্ট ওই দৃশ্যটিও ক্যামেরাবন্দী করে পরে তাঁর চ্যানেলে আপলোড করেন। একজন বিদেশীর সাথে একজন বাংলাদেশীর এরকম আচরনে অনেকে সমালোচনা করেন। পরে রবিবার (২ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর কাওরানবাজার থেকে কালুকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম। পরে তাঁকে জামিনও দেওয়া হয়।
প্রিয় পাঠক, আপনার কি মনে হয় লুক ডামান্ট স্বেচ্ছায় এই ঘটনা সাজিয়েছেন? নিজের চ্যানেলের ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য এটি করেছেন? নাকি তিনি সত্যি সত্যি বাংলাদেশে এসে হেনস্থার শিকার যেমনটা দেখা গেছে ভিডিওতে?