সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ০৭:৫৪ পিএম
ভল্ট থেকে ‘উধাও’ হওয়া ১৯ কোটি টাকা এক ভিভিআইপি গ্রাহককে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে ইউনিয়ন ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হাসান ইকবাল। তবে কোন ভিভিআইপিকে এই টাকা দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করেনি ব্যাংকটি।
হাসান ইকবাল জানান, ‘ব্যাংকিং আওয়ারের পর একজন ভিভিআইপি গ্রাহককে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। ব্যাংকিং রুলস ভায়োলেট হলেও এমন ঘটনা নতুন নয়। গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের খাতিরে এমন লেনদেন হয়’।
এদিকে এঘটনায় ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে ঘটনা খতিয়ে দেখতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের উপস্থিতিতেই ১৯ কোটি টাকার হিসাব সমন্বয় করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘ইউনিয়ন ব্যাংকের কাছে আমরা ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি। যেহেতু ওই শাখার সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং নেই তাই ব্যাংকিং আওয়ারের পর লেনদেন করতে পারে না। তবে এখনো তারা উত্তর দেয়নি। জবাব পেলে ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব’।
এর আগে ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ভল্ট থেকে ১৯ কোটি টাকার গরমিল পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শক দল। ২০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির শাখায় গিয়ে এমন তথ্য উদঘাটন করা হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ব্যাংকটির সব শাখার ভল্ট পরিদর্শন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শক দল সকাল ১০টার আগেই ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা পরিদর্শনে যায়। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শুরুতেই ওই দল ভল্ট পরিদর্শন করে। কাগজে-কলমে শাখার ভল্টে ৩১ কোটি টাকা দেখানো হলেও সেখানে ১২ কোটি টাকা পায় পরিদর্শক দল। তাৎক্ষণিকভাবে বাকি টাকার বিষয়ে ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনো জবাব দিতে পারেননি। উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন তৎপরতা শুরু করে শাখা কর্তৃপক্ষ।
প্রতিদিন লেনদেনের শেষ ও শুরুতে ভল্টের টাকা মিলিয়ে রাখার দায়িত্ব শাখার ব্যবস্থাপক, সেকেন্ড অফিসার এবং ক্যাশ ইনচার্জের। ভল্টে টাকার হিসাবে কোনো গরমিল হলে তা মিলিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এসব কর্মকর্তার। বড় অঙ্কের টাকার গরমিল হলে তা ফৌজদারি অপরাধ। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে অদৃশ্য কারণে এক্ষেত্রে কাউকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়নি। উল্টো মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, পরিদর্শনে গিয়ে যারা এ তথ্য উদঘাটন করেছেন, তাদের চাপে রাখা হয়। এমনকি থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরিও করেনি ব্যাংক।