এটা চাই, ওটা চাই এসব শিশুদের আবদার: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০৮:৫১ পিএম

এটা চাই, ওটা চাই এসব শিশুদের আবদার: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

সংবিধান সম্মত উপায়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, কারো কথায় বা কারো ইচ্ছায় নির্বাচন হবে না। এটা চাই, ওটা চাই এসব শিশুদের আবদার।

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাতের অগ্নি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দাবি’ শীর্ষক  ওই আলোচনা সভা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়।

 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “শিশুদের আবদারে তো আর দেশ চালানো সম্ভব নয়। কেননা রাষ্ট্রের দলিল হচ্ছে সংবিধান। সংবিধানের বাইরে যেসব কথাবার্তা বলছেন, পাগলামি করছেন এসব বুঝি আমরা।”

ভারত-পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের মাধ্যমে বাঙালিদের কোনো উন্নয়ন হবে না-উল্লেখ করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “ তাই তিনি তখন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার জন্য কাজ শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। আমরা বাইচান্স স্বাধীনতা পাই নাই। আমরা ৫২'র ভাষা আন্দোলন, ৫৪'র নির্বাচন, ৬২'র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬'র ছয় দফা, ৬৯'র গণ অভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন ও ৭১ এর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছি “

 

মন্ত্রী আরো বলেন, “পাকিস্তান গণতন্ত্রকে উপড়ে ফেলার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করেছিলো। পাকিস্তানের থেকে বাংলাদেশ ভালো থাকবে আর পাকিস্তান নিচের দিকে যাবে এটা তাদের মনে মানে না। পর্দার অন্তরালের খেলা একটি কারণেই যারা একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে পারে নাই তারা এবং তাদের বিদেশি প্রভুরা আজও সক্রিয়। এদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অতিথিদের পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন বিএনপি-জামাতের নির্যাতনের শিকার বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজন সালাহউদ্দিন ভূইয়া। তিনি বলেন, “আমার চেহারা আমি নিজে দেখেই ভয় পাই, মনে হয় চেহারাটা ঢেকে রাখি। যারা পেট্রোল মেরে আমাদের এই জীবিত রেখেও মৃত বানিয়ে রাখছে। আমাদের দুঃখ কে দেখবে? যারা আমার মতো এরকম অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে, বেঁচে থেকেও যারা মরে গেছি যারা আমাদের এমন করেছে সেই বিএনপি জামাতের কঠিন বিচার হোক।”

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, “বিএনপির ইতিহাস, প্রতিষ্ঠা সন্ত্রাস দিয়েই। জিয়া শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিই ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার চাবিকাঠি। এই জিয়ার নেতৃত্বে যে দল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই দল অগ্নি সন্ত্রাস করবে এটাই স্বাভাবিক। জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তারাই বলে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধে জিয়া একজন অনুপ্রবেশকারী। বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে সন্ত্রাসের ইতিহাস, তাদের দলের মানুষরা সন্ত্রাস করবে না তো কি করবে!”

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, “বিএনপি জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস আজকে নতুন নয়, তারা আগে থেকেই এই সন্ত্রাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো। যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছিলো সেই অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১২ সাল থেকে বিএনপি জামাতের নেতৃত্বে অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী শুরু করে। আজকে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ হচ্ছে তখন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিরা নানা ষড়যন্ত্র করছে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ যে প্রোগ্রাম করছে তা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ না, গ্রামেগঞ্জে ছড়িতে দিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উপদেষ্টা রুহুন আমিন মজুমদার, জহির উদ্দিন জালাল, দেওয়ান কামাল, ড. জয়নুল আবেদীন রোজ, ভাস্কর রাশা।

Link copied!