এলডিসি থেকে উত্তরণ: উন্নয়ন সহযোগিদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ পরামর্শ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৮, ২০২৩, ০২:৫৬ এএম

এলডিসি থেকে উত্তরণ:  উন্নয়ন সহযোগিদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ পরামর্শ

স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের পথে থাকা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সহযোগিতায় উন্নয়ন সহযোগিদের বাজারে প্রবেশাধিকার অন্তত ৬ বছর বাড়ানোর পক্ষে সমর্থন কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 

এলডিসি ৫ জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইডলাইনে এক অনুষ্ঠানে উন্নয়ন সহযোগীদের সামনে সরকারপ্রধান এসংক্রান্ত পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। 

কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) আয়োজিত ‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর স্মুথ অ্যান্ড সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন: মার্চিং টুওয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই সাইড লাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রথম পরামর্শ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য কমপক্ষে ছয় বছরের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ; বাণিজ্যের জন্য সহায়তাসহ তাদের বাণিজ্য সুবিধা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করতে হবে।

দ্বিতীয় পরামর্শে সরকারপ্রধান বেসরকারী খাতে প্রণোদনার মাধ্যমে উত্তরণের পথে অগ্রসর স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এফডিআই প্রবাহ বাড়ানো এবং পারস্পরিক কল্যাণমূলক বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি হালনাগাদ করার আহ্বান জানান।  

তৃতীয় পরামর্শে শেখ হাসিনা শিল্প সম্পর্ক উন্নত করা এবং ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য  বেসরকারি খাতকে সহায়তা করার উপায় অনুসন্ধানসহ উত্তরণের পথে অগ্রসর স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে টেকসই শিল্প প্রবৃদ্ধি জোরদারের আহ্বান জানান।

চতুর্থ পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদ্ভাবনী অর্থায়নের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যাতে উত্তরণ পর্বে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের খরচ সহনশীল থাকে।

পঞ্চম সুপারিশে, শেখ হাসিনা এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে কার্যকর ভৌত ও ডিজিটাল অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নের ওপর জোর দেন; এবং মানব পুঁজি গঠন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে তাদের অব্যাহত বিনিয়োগ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
  
তিনি বলেন, আমাদের উত্তরণের পথে অগ্রসর হওয়ার সময়, আমরা জানি আমরা কোথায় যেতে চাই এবং কিভাবে সেখানে যেতে হবে। আমাদের সরকার বাংলাদেশকে উত্তরণের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে যেতে দেবে না।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তরণের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য, "আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বন্ধুদের কাছ থেকে নিশ্চিত সমর্থন প্রয়োজন।
 
তিনি বলেন, বিগত ৫১ বছরে বাংলাদেশের ট্র্যাক রেকর্ড প্রমাণ করে যে, দেশটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি ন্যায্য আচরণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম এলডিসি অর্থনীতি হিসাবে, আমরা একটি সাবলীল উত্তরণের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলিকে উত্তরণের পথ বেছে নিতে উৎসাহিত করার আশা রাখি। 

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের তিনটি মানদণ্ডে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে, বাংলদেশ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশ তার আগে ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সূচকের মধ্যম বন্ধনীতে স্থান পেয়েছে। 

তিনি বলেন, এমডিজি অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে একটি মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ মানবিক জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিচ্ছে। 

ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড্যান জোগেনসেন এবং ডব্লিউটিও, ওইসিডি, ইউনিডো এবং আঙ্কটাডসহ বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাইড ইভেন্টে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

Link copied!