কাতারে সম্মেলনে গেলেন প্রধানমন্ত্রী, যেসব বিষয় প্রাধান্য পাবে

কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি-৫) পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট শনিবার বেলা ১১টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ওই সম্মেলনে সরকারপ্রধান এলডিসি উত্তরণে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানাবেন বলে জানা গেছে।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন জানিয়েছেন, সম্মেলনে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে সহজ উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক সমর্থন চাইবে বলে আশা করা হচ্ছে। দোহায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্র হিসাবে এটি ঢাকার শেষ অংশগ্রহণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে ফোরাম থেকে উত্তরণ লাভ করতে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ও কর্মসূচি:

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে শেখ হাসিনা কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনজিএ প্রেসিডেন্ট সাবা করোসি এবং ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।

৫ মার্চ কিউএনসিসি-তে বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ সভায় বক্তৃতা করবেন সরকারপ্রধান।পরে তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে, বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল রেবেকা গ্রিনস্প্যান এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ডোরেন বোগদান-মার্টিনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন।

এছাড়া, তিনি কিউএনসিসিতে বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের ওপর এলডিসি ৫ সম্মেলনে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিবেন। যৌথভাবে বাংলাদেশ, লাওস এবং নেপাল আয়োজিত ‘২০২১ সালের উত্তরণের জন্য টেকসই ও সহজ রূপান্তর’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে।

৬ মার্চ, শেখ হাসিনা সেন্ট রেজিস দোহায় ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল অফ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন। তিনি মালাবির প্রেসিডেন্ট ড. ল্যাজারাস ম্যাককার্থি চাকওয়েরার সঙ্গে বৈঠক করবেন।

তিনি কিউএনসিসি-তে ‘স্মার্ট ও উদ্ভাবনী সমাজের জন্য এলডিসিতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ’ শীর্ষক একটি পার্শ্ব ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া, তিনি আবাসিক স্থানে আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ৭ মার্চ বিশেষ অতিথি হিসেবে ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সমন্বয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে যোগ দিবেন, ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড্যান জর্জেনসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং ‘সহজ ও টেকসই উত্তরণের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব: স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন সরকারপ্রধান।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মার্চ (বুধবার) সকালে ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। ২০২২ সালের ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম পর্বে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য গৃহীত DpoA-এর বাস্তবায়ন, নতুন কর্মপরিকল্পনা ও অংশীদারিত্বের ক্ষেত্র প্রশস্ত করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও তরুণ সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সবাই অংশ নেবেন।

• বিষয় :
• এলডিসি সম্মেলন