বেটা
২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ওই বছরের ২৬ মার্চ দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওই ছুটি ঘোষণায় রাজধানী থেকে গ্রামে ছুটে যাওয়া মানুষের ঢলই করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ। এমনই তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণা রিপোর্টে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ, এবং বেসরকারি সংস্থা মহাখালীর ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি)সহ দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ওই গবেষণা রিপোর্ট করা হয়।
জিনোমিক কনসোর্টিয়ামের আওতায় বিশ্লেষণধর্মী ওই গবেষণাপত্রে দেশব্যাপী করোনার বিস্তার এবং তা প্রতিরোধে বিভিন্ন সময় লকডাউন এবং জনসাধারণের গতিবিধির ভূমিকা কেমন ছিল তা তুলে ধরা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম থেকে সংগৃহীত ফেসবুক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে জনসাধারণের রাজধানী ছেড়ে যাওয়াদের প্রাপ্ত ডাটার সাথে সার্স-কোভ-২ জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, মার্চ ২৩ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে ঢাকা বহির্মুখী যাতায়াতই মূলত দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস প্রবেশের সম্ভাব্য সময় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। পরবর্তীতে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তার ঘটে।
গবেষণা রিপোর্টের অন্যতম লেখক ডক্টর লরেন কাউলি বলেন, ‘কীভাবে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, জেনোমিক এবং মবিলিটি, ঢাকা থেকে বিভিন্ন ডাটা স্ট্রিম একত্রিত করে আমরা তা বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই গবেষণাটিতে মহামারি প্রতিরোধে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে যা ভবিষ্যতে অন্যান্য মহামারির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।’
গবেষণায় নেতৃত্বদানকারীদের একজন আইসিডিডিআর,বি-র জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ডক্টর ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতা এবং লকডাউনের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও আমার সহকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক কোলাবোরেটরদের সহযোগিতায় আমরা সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব এই গবেষণাতেই সীমাবদ্ধ নয়। পুরো পৃথিবী জুড়েই বিভিন্ন দেশে কয়েক মাস পরপর মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন ভেরিয়েন্ট তৈরি হচ্ছে এবং এর মধ্যে কিছু ভেরিয়েন্ট ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।’
দেশের সব মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই টিকাগুলোর কার্যকারিতা বোঝার জন্য আমাদের এ ধরনের কাজ অব্যাহত রেখে সরকারকে সময় মতো সঠিক তথ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে হবে।’
ফেসবুক ডেটা ফর গুড, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি আজিয়াটা লিমিটেড জনসংখ্যা মোবিলিটি গবেষণায় তথ্য সরবরাহ করেছে।
-20241121105543.jpg)
-20241027115010.png)
