বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি মার্কিন ডলার ‘পাচারের’ হিসাব এসেছে এক প্রতিবেদনে। বাংলাদেশি টাকার হিসাবে এর পরিমাণ সোয়া ৪ লখ কোটি টাকা যেখানে চলতি বছর বাংলাদেশের বাজেট ৬ লাখ কোটি টাকার মত।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এক দশকে বিশ্বের উন্নয়নশীল ১৩৪ দেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে এক দশমিক ছয় ট্রিলিয়ন বা একলাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার পাচার হয়েছে।
জিএফআইয়ের ওেই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে চীন থেকে। এরপরই আছে পোল্যান্ড, ভারত, রাশিয়া ও মালয়েশিয়া।
জিএফআই বলছে, বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ৮২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার এভাবে বেরিয়ে যায়, যা মোট বাণিজ্যের ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
আর বিশ্বের উন্নত ৩৬টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই অংক ৩৫৬ দশমিক ৮০ লাখ ডলার, যা এসব দেশের সঙ্গে মোট বাণিজ্যের ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
এই ১০ বছরে ১৩৪টি দেশের দেওয়া যেসব তথ্য জাতিসংঘের ডেটাবেইজে পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করে জিএফআই। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের ডেটা পাওয়া যায়নি।
জিএফআই যে হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, ২০০৯ সালের পর থেকে এভাবে বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে কীভাবে কোন দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়, সেই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। পাশাপাশি ৩৬টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক চিত্রও তুলে আনা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য আমদানি-রপ্তানির সময় আমদানি-রপ্তানিকারকেরা প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে কমবেশি দেখানোর মাধ্যমে অর্থপাচার করেন।
২০১৮ সালে ১৩৪টি উন্নয়নশীল দেশ ও ৩৬টি উন্নত অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের গরমিল দেখা গেছে বলেও গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির ওেই প্রতিবেদনে বলা হয়।