বঙ্গবন্ধুর মতো তার রক্তের উত্তারাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে পথ দেখাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে আজকে যদি অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হতো, তাহলে আমরা একটা ‘লকড কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়ে যেতাম। আমাদের কোন বের হবার রাস্তা থাকতো না। আজকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার। তার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ একটি পথ পেয়েছে। সঠিক পথ দেখানোর বিষয়টা আমরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা থেকেই পেয়েছি।
রবিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু : শাশ্বত বাংলার প্রতিরূপ' শীর্ষক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেইজ থেকে ছেড়ে যাওয়া পরিদর্শী জাহাজে ভাসমান এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা আইন করেছেন, যার আরো ১০ বছর পরে জাতিসংঘ এ আইনটি করেছে। বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া আইনে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমুদ্র সীমা জয় করতে পেরেছি।
পঁচাত্তরপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দেখেছি অনেকেই নেতা হতে চেয়েছিল। তারা বাংলাদেশের প্রকৃত নেতা হতে পারেনি। জিয়াউর রহমান অনেকভাবে চেষ্টা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। খুনীদেরকে তিনি আমদানী করেছিলেন। দালাল আইন বাতিল করে অপরাধীদের বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি (জিয়াউর রহমান) নেতা হতে পারেননি। তিনি খলনায়ক হয়েছিলেন। বাংলাদেশের অর্থনীতির যে পথ সে পথ তিনি রুদ্ধ করে দিয়েছিলেন। একই পথে পরবর্তী সামরিক জান্তারাও হেটেছে। বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা সেটা তারা নস্যাত করেছিল। কারণ দেশের প্রতি তাদের কোন ভালোবাসা প্রেম ছিলনা। আর এজন্যই তারা বাংলাদেশের কোন নেতা হতে পারেননি। দেশকে পিছিয়ে দেয়া ছাড়া এসব সামরিক জান্তারা কোন ভূমিকা রাখেনি।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদীগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের শিরা-উপশিরা। নদীগুলো রক্ষা করতে হবে। খালিদ বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী সেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ পথ ধরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় দেশের অর্থনীতিতে আরো সহায়ক শক্তি হতে পারে। সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলোর কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সে বিষয়ে সবাইকে আরো আন্তরিক হতে হবে।
নৌ- পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, দৈনিক অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মুসা, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ এডভোকেট মনজুর মোর্শেদ, বিআইডব্লিউটিসি'র চেয়ারম্যান আহমেদ শামীম আল রাজী, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অভ প্রফেশনালস এর বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্প্রতি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।