মার্চ ৩০, ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের হেফাজতে থাকা অবস্থায় নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মী সুলতানা জেসমিনের (৩৮) মৃত্যুর ঘটনায় সংস্থাটির ১১ জন সদস্যকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে তাদের বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। র্যাব সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব-৫, রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, “জেসমিনকে আটকের অভিযানটি চালিয়েছিল র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল। এই অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ১১ জনকে জয়পুরহাট থেকে রাজশাহীতে র্যাবের ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়েছে।”
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার আরও বলেন, “জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনাটি র্যাব সদর দপ্তর তদন্ত করছে। তদন্ত কমিটি এখন রাজশাহীতেই অবস্থান করছে। মূলত তদন্ত কমিটি এই সদস্যদের কাছ থেকে নানা প্রশ্নের উত্তর জানছেন। তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতার অংশ হিসেবেই তাদের রাজশাহী আনা হয়েছে।”
এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনও স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, “জেসমিনকে আটকের অভিযানে র্যাবের যে ১১ জন সদস্য ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে রাজশাহীতে ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়েছে।” তদন্তের স্বার্থে ওই তদন্তের স্বার্থে তাদের ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারাআবার কর্মস্থলে ফিরে যাবেন বলে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার এই পরিচালক’।
প্রসঙ্গত, জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সহকারী ছিলেন। গত ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে নওগাঁ থেকেই তাকে আটক করে র্যাব-৫ এর রাজশাহীর একটি দল। র্যাব দাবি করছে, আটকের পরই অসুস্থ হয়ে পড়লে জেসমিনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু জেসমিনকে সকালে আটক করা হলেও নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। ২৩ মার্চ বিকেলে রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রতারণার মামলা করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এনামুল হক। মূলত স্থানীয় সরকারের রাজশাহীর পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ সকালে নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী জেসমিনকে আটক করে র্যাবের একটি দল।
র্যাবের হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যু হলে নির্যাতনের অভিযোগ তোলে পরিবার। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টও বিষয়টি জানতে চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জেসমিনের মৃত্যুর কারণ তদন্ত করছে র্যাব সদর দপ্তর। র্যাবের তদন্ত কমিটি এখন রাজশাহীতে অবস্থান করছে।