ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সভায় পরিষদের সভাপতি দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এ দাবি জানান। ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৩, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’ শীর্ষক ওই সভার আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ।
সভায় দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, “আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সাইবার ক্রাইম বন্ধ করা জন্য করেছি। তাহলে সেখানে এটা যুক্ত করা হোক, এই আইন সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হবে না।”
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, “সাইবার ক্রাইম বন্ধ করার জন্য যদি এই আইন ব্যবহার করা হয়, তাহলে তো অন্যকথা। কিন্তু এখন স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, মতপ্রকাশের ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই এটা বাতিল করা হোক। অথবা সেখানে একটা ধারা যুক্ত করা হোক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট গণমাধ্যম ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর প্রয়োগ করা হবে না। এটা আমরা অফিসিয়ালি আপনাকে (সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু) প্রস্তাব দিচ্ছি।”
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, “ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে যেসব সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলা করা হয়েছে তা যেন বাতিল করা হয়। এ আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুক্তি দিতে হবে।”
সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় পজেটিভ একটা আইন হতে পারে। সেটা আমাদের সংবিধানে ৩৯ অনুচ্ছেদে আছে।
আইন বাতিল নয়, সংশোধন হোক: ইনু
সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ওই সভায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “আমি মনে করি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল নয়, সংশোধন করা হোক।”
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে গণবান্ধব করার পরামর্শ দিয়ে সাবেক এই তথ্যমন্ত্র্যী বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর এই আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে করতে হবে। সরকারের আইনমন্ত্রী যেহেতু বলছেন-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু-কিছু ধারা সরকারকে বিব্রত করছে, এটা সংশোধন করা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সরকারকে বলব- আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিয়ে এটি সংশোধন করুন, গণমাধ্যমবান্ধব করুন।”
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় ওই সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর, সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, দৈনিক দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন।