মানহানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় স্থায়ী জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও অ্যাডভোকেট এ এইচ এম কামরুজ্জামান অংশগ্রহণ করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, জামিনের অপব্যবহার হয়েছে কি? জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ বলে, রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে, জামিনের অপব্যবহার করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১৪ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।
বিএনপি চেয়ারপারসন বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আছে। আসলে দলটি ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের কাছে কোনো ধর্মের মানুষ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে। হিন্দুদের ওপর হামলা করেছে। তার এমন বক্তব্যকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের পাশাপাশি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে শ্রেণিগত বিভেদ সৃষ্টি করেছে, এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়।
অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ২০১৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন এ বি সিদ্দিকী।
এই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের শেষে দিকে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব চেয়েছিলেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দুর্নীতি, লুটপাট হত্যা, গুম, গ্রেপ্তার, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এসব বক্তব্যের কারণেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
পরে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান তার আইনজীবীরা। অবশেষে এ দুই মামলায় তিনি স্থায়ী জামিন পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।