আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক এমন নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নেওয়ার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)। নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আগ্রহী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনে আবেদনের জন্য চার মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আবেদন করার সময়সীমা শেষ হবে আগামী ২৯ আগস্ট।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের স্বাক্ষর করা ওই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৯০ক এর অধীন নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮-এ উল্লিখিত শর্তাবলী পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলসমূহকে বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত নির্দেশিকা মোতাবেক পূরণপূর্বক আগামী ২৯ আগস্ট, ২০২২ তারিখের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে। নিবন্ধীকরণে আগ্রহী রাজনৈতিক দলকে স্বীয় লেটারহেড প্যাডে দরখাস্ত করতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে যা জমা দিতে হবে-
(ক) দলের গঠনতন্ত্র
(খ) দলের নির্বাচনী ইশতেহার, যদি থাকে
(গ) দলের বিধিমালা, যদি থাকে
(ঘ) দলের লোগো এবং পতাকার ছবি
(ঙ) দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সকল সদস্যের পদবিসহ
নামের তালিকা
(চ) দলের নামে রক্ষিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং উক্ত অ্যাকাউন্টের সর্বশেষ স্থিতি
(ছ) দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ
(জ) দলের নিবন্ধনের দরখাস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত ক্ষমতাপত্র
(ঝ) নিবন্ধ ফি বাবদ সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবরে জমাকৃত অফেরতযোগ্য টাকার ট্রেজারি চালানের কপি (ট্রেজারিতে টাকা জমাদানের কোড নম্বর-১০৬০১০১১০০১২৫-১১০০০০০০০-১১০০১০০০-১৪২২২০৪)
(ঞ) দরখাস্ত দাখিলে দিন পর্যন্ত-
(অ) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যে কোনো একটিতে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসন লাভের সমর্থনে প্রামাণিক দলিল;
অথবা
(আ) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যে কোনো একটিতে দরখাস্তকারী দল কর্তৃক নির্বাচনে অংশগ্রহণকৃত নির্বাচনী এলাকায় প্রদত্ত মোট ভোট সংখ্যার শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট লাভের সমর্থনে কমিশন বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র;
অথবা
(ই) দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ, উহা যে নামেই অভিহিত হোন না কেন, একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দপ্তর অন্যূন এক তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দপ্তর এবং অন্যূন একশটি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে, মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর দপ্তর এবং প্রতি উপজেলায় বা, ক্ষেত্রমতে, থানায় অন্যূন দুইশ ভোটার সদস্য হিসাবে দলের তালিকাভুক্ত থাকার সমর্থনে প্রামাণিক দলিল।
সব কিছু ঠিক থাকলে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ওই দলের অনুকূলে কমিশন ফরম-৩ এ একটি নিবন্ধন সার্টিফিকেট দেবে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।
প্রসঙ্গত,এর আগে সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সে সময় নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলগুলো হলো
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জাপা), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
নিবন্ধন বাতিল হয়েছে যে পাঁচ দলের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)