এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০১:৫৫ পিএম
প্রবীণ রাজনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি নাগরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাল মঙ্গলবার। কাল সকাল সাড়ে ১০টায় এ শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হবে। এই শ্রদ্ধানুষ্ঠান চলবে, দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন পঙ্কজ ভট্টাচার্যের শ্যালিকা বহ্নিশিখা দাশ পুরকায়স্থ। ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য (৮৪) গতকাল রবিবার রাতে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত সোমবার তাঁকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শনিবার সকালে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গতকাল রাত ১২টা ২৮ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়তে পারেন : প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্য আর নেই
বহ্নিশিখা দাশ পুরকায়স্থ গণমাধ্যমকে বলেন, পঙ্কজ ভট্টচার্যের মরদেহ রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। কাল সকাল সাড়ে ১০টায় নাগরিক শ্রদ্ধা নিবদনের জন্য তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে রাখা হবে। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদন চলবে। এরপর রাজধানীর পোস্তগোলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত শতকের ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক।
১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তিনি ১৯৬৬ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন।
মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন পঙ্কজ। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম গঠনের সময় তিনি ছিলেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে সম্মিলিত ‘সামাজিক আন্দোলন’ নামে দেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক মানুষের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন।
২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প বয়সে কৃতী ফুটবলার হিসেবেও প্রভূত খ্যাতি লাভ করেন তিনি। লেখালেখি ও সংস্কৃতিচর্চায়ও বরাবর তাঁর আগ্রহ ছিল অসীম।