মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত ১০-এ বদলি করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার(১৫ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বর পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের দিন ঠিক করেন।
অপর দুই আসামি হলেন- পরীমনির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দিপু ও পরীমনির বড় খালু কবীর হাওলাদার। আসামিরা সবাই জামিনে আছেন।
এর আগে, গত ২৬ অক্টোবর একই আদালতে হাজির হন পরীমনি। সেদিনও অভিযোগপত্র আমলে নেয়ার শুনানি হওয়ার কথা ছিল । তবে বিচারক ছুটিতে থাকায় সেদিন ভারপ্রাপ্ত আদালত শুধু জামিন মঞ্জুর করেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরীমনি আদালতে আসেন। সকাল ১০ টার দিকে তিনি আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন। সকাল সোয়া ১১ টার দিকে শুনানি শুরু হয়। পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী শুনানি করেন।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ মামলার অভিযোগপত্র পাওয়ার পর পরীমনির হাজিরা এবং অভিযোগপত্র গ্রহণে শুনানির জন্য ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর আগে, চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দুই মাসের মাথায় গত ৪ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফার জমা দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। তদন্তকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামীয় মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে।
অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহের বিষয়ে অভিযোগেপত্রে আরও বলা হয়, পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দকৃত মাদকদ্রব্য মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এছাড়া জব্দকৃত গাড়ী পরীমনি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন। যা তিনি ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে কিনেছিলেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই সময় বাসা থেকে ১৯টি বোতলে ১৮.৫ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক সøট এলএসডি মাদক জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় র্যাব ১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত ৪ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত ৫ আগস্ট চার দিনের ও গত ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড পাঠান আদালত। ওই রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে মামলায় তৃতীয়দফা গত ১৯ আগস্ট ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট পরীমনিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ কারাগারে থাকা পরীমনিকে অসুস্থা, নারী, অভিনেত্রী, মাদকের পরিমান বিবেচনায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন প্রদান। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি কারামুক্ত হন।