ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩, ১১:০৫ পিএম
পুলিশের তালিকায় তিনি খুনের ফেরারী আসামী। তা-ও আবার পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন! খুনের ঘটনার পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এড়াতে কিছুদিন ছিলেন গার্মেন্টসকর্মীর পেশায় ছদ্মবেশে। এরপর ছিলেন মডেলের ছদ্মবেশে, শোবিজ অঙ্গনে। এভাবে চলছিল ভালই। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবারই তার আত্মগোপনের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। এই মডেলের নাম সুহাসিনী অধরা। প্রকৃত নাম ফজিলাতুন্নেছা রিয়া (২৯)।
জানা যায়, রাজধানীর শাহ আলী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ূন কবিরকে (৪৪) হত্যা করে ফজিলাতুন্নেছা রিয়া থেকে হয়ে যান সুহাসিনী অধরা (২৯)। এরপর যুক্ত হন মডেল–অভিনেত্রী হিসেবে। গত দশ বছর নিজের নামে কাগজপত্র সব পরিবর্তন করে ভালোই চলছিল তাঁর জীবন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কথিত সেই মডেলকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–৩।
শুক্রবার সকালে র্যাব-৩–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, পরিচয় পরিবর্তন করে মডেল হয়েছিলেন ফজিলাতুন্নেছা। তাঁর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মেরুল বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব–৩।
র্যাব জানায়, ২০১৩ সালে মিরপুরের পূর্ব মনিপুরের ১০৫০/৩ কাঁঠালতলার একটি ভবন থেকে শাহ আলী থানায় কর্মরত এএসআই হুমায়ূন কবিরের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীরে বিষক্রিয়া ইনজেকশন দিয়ে ও শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফজিলাতুন্নেছা ও তাঁর স্বামী রাফা-এ-মিষ্টি। তাঁর স্বামী এই হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি। তাঁকে গত বছর গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এই মডেল তাঁর স্বামীসহ হুমায়ূন কবিরের বাসায় সাবলেট থাকতেন।
র্যাব ৩–এর অধিনায়ক জানান, ২০১৩ সালে এএসআই হুমায়ূন হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে নারায়ণগঞ্জর ফতুল্লায় চলে যান ফজিলাতুন্নেছা। সেখানে গিয়ে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৫ সালে নাম-পরিচয় পরিবর্তন করেন। জাল এসএসসি সার্টিফিকেট তৈরি করে ঢাকার একটি মাল্টিমিডিয়া কোম্পানির বিক্রয় কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন তিনি।
২০১৬ সাল থেকে মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে ছোট ও বড় পর্দায় নিজের নাম লেখান। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম ফজিলাতুন্নেছা রিয়া থেকে কৌশলে সুহাসিনী অধরা করেন। নিজেকে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। বসবাস শুরু করেন, রাজধানীর মেরুল বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারে।