ঢাকা মেট্রোপলিটৈন পুলিশের আহবানে সাড়া দিয়ে শনিবার রাজধানীর সব প্রবেশমুখে শান্তি সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সরে দাঁড়ালেও বিএনপি তাদের ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে চায়। এমতাবস্থায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘোষণা অনুযায়ি রাজধানীর উত্তরা বিএনএস সেন্টারের উল্টো দিকে রাস্তার পূর্ব পাশে, গাবতলী এস এ খালেক বাসস্টেশনের সামনে, নয়াবাজার বিএনপি অফিসের সামনে ও যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভার থেকে নেমে দনিয়া কলেজের সামনে দলের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের কথা ছিল।
তবে শনিবার সকালে সরেজমিনে এসব স্থানে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের দেখা না গেলেও বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়ে। এ সময় তারা জলকামান, এপিসি, প্রিজনভ্যানসহ ব্যাপক সাজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন।
তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
ডিএমপির ওয়ারী জোনের উপপুলিশ কমিশনার জিয়াউল আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, “বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে আমরা ডিএমপির পর্যাপ্ত পুলিশ এবং আনসারবাহিনী রয়েছে। বিজিবিও প্রস্তুত রয়েছে।”
এদিকে সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঢাকাগামী লেনে আমিনবাজার ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সামনেও পুলিশ সদস্যের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
এর আগে, রাজধানীর সব প্রবেশমুখে শান্তি সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ। অন্যদিকে, রাজধানীর চার প্রবেশ পথ- আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, গাবতলী ও আমিনবাজারে সকাল ১১টা থেকে শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় যুবলীগ।
বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগ। মহানগরীর প্রবেশমুখে শনিবার অবস্থান নেয়ার কথা জানিয়েছিল সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। রাজধানীর ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, বাবু বাজার, শ্যামপুর, কমলাপুর অবস্থান নিয়ে শান্তি সমাবেশ করার কথা ছিল সংগঠনটির।
শনিবার (২৯ জুলাই) ঢাকার প্রবেশমুখে মুখোমুখি অবস্থানে কর্মসূচি পালন করার কথা জানায় দুই দল। ফলে এ নিয়ে নতুন করে চিন্তায় পড়েন সাধারণ মানুষ।
দুই দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে ডিএমপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে একটি বার্তা পাঠানো হয়। এতে দুই দলকেই অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি জানান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
শুক্রবার রাতে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “তাদের কাছে শনিবার কর্মসূচি পালনের জন্য দুটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আবেদন জমা পড়লেও তারা কোনো দলের পক্ষে সায় দেননি।”
খন্দকার গোলাম ফারুক আরও বলেন, “কাউকে কর্মসূচি পালনের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ কর্মসূচি পালন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা যা নেওয়ার, তাই করা হবে।”
এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ সরে আসে তাদের দলীয় কর্মসূচি থেকে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি বিরত রাখব। তবে প্রতিটি থানা ওয়ার্ড কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারা দিবে। তবে বিএনপি কর্মসূচি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বেলা ১১) প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। এবিষয়ে জানতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।