ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি: অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ১৩ ভাগই বাংলাদেশি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৬, ২০২১, ০৯:১০ এএম

ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি: অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ১৩ ভাগই বাংলাদেশি

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তালিকায় এবারও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে গত বছরের তুলনায় সংখ্যা একটু কমেছে।এবারের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে তিউনিশিয়া।ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশী শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে আরও্র রয়েছে মিসর, আইভরি কোস্ট, ইরান, গিনি, ইরিত্রিয়া, মরক্কো, সুদান ও ইরাক।

সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিষয়ে এসব তথ্য জানা যায়।

উন্নত জীবন আর বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে অবৈধভাবে যারা ইউরোপের দেশগুলো বিশেষ করে ইতালিতে পৌঁছাতে চায়, তারা আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করে।

ইউএনএইচসিআর এর ওই তথ্যে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত যারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি ও দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ২৮ শতাংশই উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার নাগরিক। এতে আরও বলা হয়, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যার দিক দিয়ে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শতকরা ১৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের প্রথম ৮ মাসেও অবৈধভাবে ইতালিতে যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তালিকার দ্বিতীয় স্থোনে ছিল বাংলাদেশ। আর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল তিউনিশিয়ার। গত বছর ইতালিতে মোট অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ৪১ ভাগ ছিল তিউনিশিয়ার। আর বাংলাদেশি ছিল ১৬ ভাগ।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যে আর জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ৪৬ হাজার ৮৫০ জন ইতালিতে পৌঁছেছেন। গত বছরের একই সময়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো

অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ১৫৮। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ইতালি পাড়ি দেওয়া মানুষের হার ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। তাঁদের মধ্যে লিবিয়া থেকে ১৯ হাজার ৭৮৩ জন এবং তিউনিসিয়া থেকে গেছেন ১৭ হাজার ৫৮৪ জন।

কেন ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি?

ইউরোপকে অনেকে স্বপ্নের সোনার হরিণ বলে অনেকে মনে করে থাকেন। তাদের ধারনা দেশটিতে গেলে জীবনের ধরণই পাল্টে যাবে, হাতে আসবে কাড়ি কাড়ি টাকা, সমাজে বাড়বে প্রভাব প্রতিপত্তি। আর তাই উন্নত জীবন আর বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে বাংলাদেশসহ অনেক দেশের লোকজন ইউরোপে যাচ্ছেন। এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগেরই গন্তব্য ইতালি। চলতি বছর দেশটিতে যাওয়ার  প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে।

অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার অন্যতম পথ হচ্ছে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রবেশ করা। ইতালি প্রবেশের অন্যতম রুট বা সুবিধাজনক জায়গা হচ্ছে আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে দারিদ্র্যের কারণে লিবিয়া হয়ে হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছেন। 

বাংলাদেশ ,ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়া,  আফ্রিকা ও মধ্যপা্চ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা উন্নত জীবন গড়া ও ভাগ্যের  চাকা বদলানোর উদ্দেশ্য নিয়ে নানা উপায়ে লিবিয়া পৌঁছে। তারপর দেশটির  জুয়ারা উপকূল  থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অনেকে ইতালি পৌঁছে থাকে। জীবনের  ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবিতে অনেকের মৃত্যু ঘটে। 

Link copied!