র্যাবের তৎরতা নিয়ে প্রায়শঃ অভিযোগ উঠে দেশ-বিদেশে। ছবি: সংগৃহীত
মানবিকতা দিয়ে অপরাধ দমনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাফল্য বিশ্বের বুকে নজিরবিহীন। র্যাব চেষ্টা করে মানবাধিকার সমুন্নত রেখেই তাদের ওপর দায়িত্বগুলো পালন করতে।
র্যাবের ১৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব সদর দপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে র্যাবের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এসব কথা বলেন।
র্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, সব ধরনের ব্যক্তিস্বার্থ, লোভ ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে থেকে র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে এবং করতে হবে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, অপহরণকৃত ভিকটিমদের উদ্ধারে র্যাবই হলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল। র্যাব প্রথমে অল্পসংখ্যক ব্যাটালিয়ন দিয়ে শুরু করলেও পরিস্থিতির দাবি মোতাবেক সর্বশেষ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় মোট ১৫টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সব ধরনের সন্ত্রাস মোকাবিলায় সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে সফল অভিযান পরিচালনা করে র্যাব আজ একটি সুসংগঠিত ও গতিশীল বাহিনী হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। র্যাবে কর্মরত সব সদস্যদের আন্তরিক নিষ্ঠা, মেধা ও পরিশ্রমের ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে র্যাব ফোর্সেস সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা জঙ্গি প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছি, মাদক রোধেও সক্ষম হব।’
র্যাবের ডিজি বলেন, ‘র্যাব শুধু অপরাধ দমন ও আসামি গ্রেপ্তার করে না; পাশাপাশি আরও উদ্ভাবনীমূলক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধকে সমূলে উৎপাটনে নিয়োজিত থাকে। অপরাধীর মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের মূল ধারায় তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগে আত্মসমর্পণকৃত ৪২১ জন জলদস্যু ও জঙ্গিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আমরা যুক্ত করেছি। এভাবে অপরাধ দমনে বহুমুখী কর্মপন্থা নিয়ে র্যাব কাজ করে যাচ্ছে। অপরাধকে সমূলে উৎপাটনে র্যাবের এই বহুমুখী উদ্যোগ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। মানবিকতা দিয়ে অপরাধ দমনের সাফল্য বিশ্বের বুকে নজিরবিহীন।’
শহীদ র্যাব সদস্যদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছবি: র্যাবের সৌজন্যে
এ ছাড়া প্রথমবারের মতো আজ আভিযানিক কার্যক্রমে শহিদ র্যাব সদস্যদের স্মৃতি স্মরণে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘র্যাব মেমোরিয়াল ডে’ পালন করা হয়েছে। শহিদ র্যাব সদস্যদের স্মৃতি স্মরণে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আভিযানিক কার্যক্রমে শহিদ র্যাব সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও শহিদ র্যাব সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন র্যাবের মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে র্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান ছিল র্যাবের জন্য অন্যতম একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে গুলিবিনিময়ে ১০০ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। অভিযানে গুলিবিদ্ধ হন ছয় র্যাব সদস্য। অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের নিদর্শনস্বরূপ ২০২০ এবং ২০২১ সালে মোট ৬০ জন র্যাব সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী বিপিএম (সাহসিকতা) পদকে ভূষিত করেছেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আর এমনিভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি জঙ্গি, চরমপন্থী ও সন্ত্রাস দমন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা রোধ, ভেজালবিরোধী অভিযান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও গতিশীল রাখা এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা কর্মসূচিতে র্যাবের বীরত্বগাথা অবদান সব মহলে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে। আপনারা জানেন, শুধু তাই নয়, আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, অপহরণকৃত ভিকটিম উদ্ধারে র্যাবই হলো মানুষের শেষ ভরসা স্থল।’