মামুনুলসহ হেফাজতের ১৭ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৬, ২০২১, ০১:৫৭ এএম

মামুনুলসহ হেফাজতের ১৭ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে (২৬ মার্চ) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে সহিংসতা-ভাঙচুর ও সারাদেশে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দলের যুগ্মমহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী খন্দকার আরিফ-উজ-জামান বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন হাজার হেফাজত, জামায়াত-শিবির, বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের কাছে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া বাদীর অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

মামলায় সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলার পাশাপাশি দেশব্যাপী নৈরাজ্য তৈরির পরিকল্পনার অভিযোগ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব, লোকমান হাকিম, নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, নুরুল ইসলাম জেহাদী, মাজেদুর রহমান, হাবিবুর রহমান, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, জসিম উদ্দিন, মাসুদুল করিম, মনির হোসাইন কাশেমী, যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, ফয়সাল আহমেদ, মুশতাকুন্নবী, হাফেজ মো. জোবায়ের ও হাফেজ মো. তৈয়ব।

সেইসঙ্গে মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আরও দুই-তিন হাজার আসামি ব্রাক্ষণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বাড়িঘরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে।

মামলার এজাহারে বাদী আরিফ-উজ-জামান বলেন, তিনি ওয়ারী ব্যাংকিন স্ট্রিটের বাসিন্দা। গত ২৬ মার্চ তিনি বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। ফরজ নামাজ শেষে তিনি মসজিদের ভেতরে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ধর্মান্ধ ব্যক্তিদের জুতা প্রদর্শনসহ নানা ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিতে দেখেন। ঐ অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে তিনি উত্তর গেটের সিঁড়িতে কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির-বিএনপি-হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তিদের উচ্ছৃঙ্খল জমায়েত দেখতে পান।

তাদের স্লোগান ও কথোপকথন থেকে জানতে পারেন, মামুনুল হকের নেতৃত্বে শীর্ষস্থানীয় হেফাজত, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান বানচালের ষড়যন্ত্র করেছে।

সেইসঙ্গে সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিজ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, লঠি, শাবল, পাইপগান ও রিভলবার নিয়ে বাদীসহ অন্যান্য মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করে এবং কিশোরগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে। তারা বায়তুল মোকাররমের বিভিন্ন হাদীস ও কোরান শরীফসহ ধর্মীয় বইপত্র পুড়িয়ে ইসলামের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।

এ ঘটনায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার হয়। তারা দেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর ও মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার মাধ্যমে অবৈধ পথে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

Link copied!