রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে মায়ের নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোজিনা। তুরস্কের স্থাপত্য নকশার আদলে তৈরি ‘দশ গম্বুজ খাদিজা জামে মসজিদ’ নামে মসজিদটি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের উদ্বোধন করা হয়। পৌনে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদটি নির্মাণে সময় লেগেছে ২ বছর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রোজিনা গণমাধ্যমে বলেন, “জম্মভূমির কথা আমার সব সময় মনে পড়ে। ব্যস্ততার কারণে গোয়ালন্দে তেমন আসা হয় না। তারপরও আমার সমস্ত অনুভূতি জুড়ে আমার এই জন্মভূমি। সেই অনুভূতি থেকেই বাড়ির সামনে মায়ের নামে মসজিদটি নির্মাণ করেছি।”
গোয়ালন্দে একটি চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়ে তিনি এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা রোজিনা ছাড়াও অন্যদের মধ্যে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজিজুল হক খান মামুন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গ, চলচ্চিত্রে আসার আগে রোজিনা মঞ্চ নাটক করতেন। তখন তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন। ১৯৭৬ সালে ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। এফ কবীর পরিচালিত ‘রাজমহল’ সিনেমাটি সুপার ডুপার হিট হলে ঢালিউডে তার আসন পাকাপোক্ত হয়। আশির দশকে প্রথম সারির নায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি।
বাংলা চলচ্চিত্রের ভার্সেটাইল এই অভিনেত্রী শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতের পশ্চিম বাংলার তাপস পাল, বলিউড-টলিউডের মিঠুন চক্রবর্তী, পাকিস্তানের জনপ্রিয় নায়ক নাদিমসহ ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক অভিনেতার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘অবিচার’ চলচ্চিত্রটিতে তার অভিনয় দুই বাংলায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
১৯৮০ সালে ‘কসাই’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন রোজিনা। ১৯৮৮ সালে ‘জীবনধারা’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনি বাচসাস পুরস্কারও পেয়েছেন।
‘তার অভিনীত ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘সাহেব’, ‘তাসের ঘর’, ‘হাসু আমার হাসু’, ‘হিসাব চাই’, ‘বন্ধু আমার’, ‘কসাই’, ‘জীবনধারা’সহ বেশিরভাগ চলচ্চিত্র ব্যবসাসফল।