দেশে একদিকে চলছে ডলার সংকট। এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে এলো। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ে আমদানি বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর সোমবার রিজার্ভ কমে যায়। ফলে সোমবার দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৮৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র এই তথ্য জানায়।
এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। আর গত বছরের একই সময়ে রিজার্ভ ছিল ৪২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
প্রসঙ্গত, আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। খারাপ অবস্থার কারণে গত অক্টোবরে আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাকি দেশগুলো প্রতি দুই মাস অন্তর নিজেদের মধ্যকার দায় নিষ্পত্তি করে। গত মার্চে আকুতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির ১ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ছিল ১ দশমিক ৩২ বিলিয়ন, মে-জুন সময়ে ছিল ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন এবং জুলাই-আগস্টে ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরখানেক ধরে রিজার্ভ কমার ধারায় রয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল শেষে রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য এর বড় অংশই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করার কারণে।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত ৩ মে পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে ১২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরেও ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। মূলত সরকারি কেনাকাটা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আমদানি কম থাকার পাশাপাশি উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে ২০২১ অর্থবছরে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। সেই সাথে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে ২৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৮০ ডলারের নিচে থাকতে পারবে না।