জুন ৫, ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম
বাংলাদেশে আসছে সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে মন্তব্য করেছেন বংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর শ্যামলিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের অন্তর্গত ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনের (মোহাম্মদপুর-আদাবর, শেরে বাংলানগর) ৮টি ওয়ার্ডের ১০৪টি ইউনিটের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. সাদেক খান এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল ও সঞ্চালনা করবেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের সংগ্রামে আত্মাহুতি দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অবিচল এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রশ্নে শেখ মণি ছিলেন আপোসহীন। তাই তাঁকে বলা হয় মুজিব বাহিনীর স্রষ্টা এবং মুজিববাদের প্রবক্তা। সেই ধারাবাহিকতার লক্ষ্যে আমরা প্রত্যাশা করি যে যুবলীগের এমন নেতৃত্ব সৃষ্টি করবো যারা বঙ্গবন্ধুকন্যার উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে যে কোন ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত। অতএব, আগামী দিনের যুবলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে আপনারা আদর্শিক ও ত্যাগী নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
পরিশ্রমী ও সাহসী নেতৃত্ব আপনারা নির্বাচন করার আহবান জানিয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, যে নেতৃত্ব আগামীর উন্নত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নেতৃত্ব দেবে। তিনি আরও বলেন, আগামীতে আপনারা দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী নেতৃত্বের নির্বাচন করবেন বলে বিশ্বাস করি। সামনের সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক হবে। সব নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইউনিট সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের তৃণমূল শক্তিশালী করতে হবে। এসব ইউনিট আমাদের অন্য সংগঠনের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
শেখ পরশ আরও বলেন, যদি ২০০৮ থেকে ২০২৩ সালের যোগাযোগ খাতে উন্নয়ন খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন কি অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার গণমুখী বাজেট উপহার দিয়েছে। এছাড়া উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও নির্বাচিত করতে হবে। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের মাঠে ময়দানে থাকতে হবে। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে তৈরি থাকতে হবে। এটা সম্ভব হবে যখন আমরা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং বন্ধ করব। তিনি আরও বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের একমাত্র বাধা বিএনপি। তারা এখন নামসর্বস্ব একটি দলে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোনোভাবে জনগণের ওপর সহিংসতা আমরা বর্দাস্ত করব না। যদি সহিংসতা করা হয়, তাহলে যুবলীগও শক্তি প্রদর্শন করতে বাধ্য হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমি যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক সাহেবকে বলতে চাই, আজকে যখন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাই, তখন যুবলীগের নতুন উদ্দীপনা, নতুন ভাবমূর্তি দেখে আমার প্রাণ ভরে যায়। আজকে ১০৪টি ইউনিট সম্মেলন হলো। এই ইউনিটসমূহ হবে বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। তারা ক্যান্টনমেন্টের ভূমিকা পালন করবে। এই ক্যান্টনমেন্ট হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কর্মযজ্ঞের মূলভিত্তি।
তিনি মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নাকি রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তার কথা শুনে ঘোড়াও হাসে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পূর্বে মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন। সেই সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি নাকি রাষ্ট্রের মেরামত করবে, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে। যারা সরকারের পাশে আর একটি হাওয়া ভবন প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্রকে গুম-হত্যার নীলাভূমি করেছিল তাদের মুখে এসব কথা মানায় না। ওদের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার, সজাগ থেকে রাজপথে থেকে তাদের বীষদাঁত ভেঙ্গে দিতে হবে। এটাই হবে আজকের সম্মেলনের শপথ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, এই আদাবর, মোহাম্মদপুর, শেরে বাংলানগর এলাকার যুবলীগ ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাতের নির্মম নির্যাতনের কথা ভোলে নাই। একই সময় বিএনপি-জামাত সারা দেশে সন্ত্রাসের অভয়ারন্যে পরিণত করেছিল। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালে সারা দেশে একযোগে সিরিজ হামলা চালিয়ে এদেশটাকে জঙ্গিবাদের দেশে পরিণত করেছিল। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে। কোন অপশক্তিই এই অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামাত যত ষড়যন্ত্রই করুক না কেন সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গ জবাব দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে যুবলীগ।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়া সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মো. রফিকুল ইসলাম, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, সেলিম আলতাফ জর্জ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন খসরু, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দি, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।