ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে সাগর এখন বিক্ষুব্ধ। এতে ঝুঁকিতে রয়েছেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা। সেখান থেকে শেষ মূহুর্তে আর কাউকে সরিয়ে আনার সুযোগ নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তারা বলছেন, সেখানকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাত হাজার মানুষের ৭ থেকে ১০ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেন্টমার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৩৭টি। এগুলোতে আশ্রয় নিতে পারবেন ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
দ্বীপের ইউপি সদস্য মো. খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, জোয়ারের সাথে সাগরে পানি অনেক বেড়েছে। সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে ভয়ে অনেকে টেকনাফে যেতে চান।
দ্বীপের এক বাসিন্দা বলেন, সকাল থেকে দ্বীপে বাতাসের গতি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় এলে দ্বীপের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটে। সাগরের পাড়ে আশ্রয়কেন্দ্র। দ্বীপের অবস্থা খারাপ। আতঙ্কে আছি।
কিন্তু আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদ মনে করছেন না দ্বীপটির বাসিন্দারা। এ অবস্থায় টেকনাফে আসার আকুতি জানিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সাগর উত্তাল থাকার কারণে নৌযান চলাচল না করায় তাদেরকে সেখান থেকে নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আনা ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে, সেগুলো অনেকটাই নিরাপদ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ যে, এটাও সত্য।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.কামারুজ্জামান বলেন, উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে এখন আর কাউকে আনা সম্ভব না। প্রশাসন থেকে এটা মানতেও চাইবে না। গতকাল থেকে বিভিন্ন স্পিডবোট ও নৌকা চলাচল করছিল। তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে বোট মালিকদেরই লোকজন প্রশাসনকে জানিয়েছেন, সাগরের যে অবস্থা তাতে চলাচল উপযোগী নয়।
শনিবার আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঝড়ের অগ্রভাগ প্রথমে আঘাত হানবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এই দ্বীপে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের দিকে প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে। সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজারে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে জারি করা হয়েছে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত।
এরই মধ্যে টেকনাফে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হোটেল-মোটেল ও আত্মীয়দের বাড়িতে উঠেছেন সেন্টমার্টিনের প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ে জানমালের ক্ষতি রোধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে নেওয়া হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে। চলছে সতর্কতামূলক মাইকিংও। টেকনাফের বাসিন্দাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই।
মোখার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় টেকনাফে প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা, মজুদ রয়েছে প্রায় ৬ টন চাল।