মার্চ ৪, ২০২৩, ০৩:১৬ পিএম
ছাত্রীর লাশটি ঝুলানো ছিল গাছে। এলাকাবাসীর ধারনা ছিল, সে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঘটনার তদন্ত ও লাশের সুরতহালের পর বেরিয়ে আসে ভিন্ন খবর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে আট ইটভাটা শ্রমিক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুইজন সম্প্রতি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায়।
ঘটনার পর ওই স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, একটি ইটভাটার আটজন শ্রমিক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়া উপজেলার একটি গ্রামে বাড়ির পাশ থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে স্থানীয় মানুষ আত্মহত্যার ধারণা করলেও সুরতহালের পর পুলিশের ধারণা হয়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কারণে কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনায় গত রবিবার ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে পাঁচ থেকে ছয়জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে ধর্ষণ ও হত্যার মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভুঁঞা। সেখানে জানানো হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয় ওই স্কুলছাত্রী। এ সময় একটি সংঘবদ্ধ দলের কবলে পড়ে সে। ওই আটজন মিলে ধর্ষণের পর ফাহিমা নামের ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখেন। পুলিশ এ ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে দুজন গতকাল শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. শাহজাহান, মো. শহিদ মিয়া, মাছুম বিল্লাহ, আলমগীর হোসেন ও রাসেল মিয়া। শাহজাহান ও শহিদ মিয়ার নামে এর আগেও ফুলবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার সবার বাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে।
পুলিশ সুপার মাছুম আহমদ ভুঁঞা বলেন, পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, ধর্ষণকারী আটজন ইটভাটার শ্রমিক। তাঁরা দিনের বেলায় কাজ করলেও রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নারী পাচারে যুক্ত। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিনজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।