‘বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও বঙ্গমাতা ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ৮, ২০২১, ০৪:৩১ পিএম

‘বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও বঙ্গমাতা ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত’

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেবল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও অন্যতম অগ্রদূত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রবিবার(৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৭ আগস্ট) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বাঙালি জাতির অহঙ্কার এবং নারী সমাজের প্রেরণার উৎস। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।’

বানীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’ যা মহীয়সী এই নারীর জীবন ও কর্মের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত এবং যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

শৈশব থেকেই বঙ্গমাতা  ছিলেন সাহসী ও দৃঢ়চেতা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন,‘১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তার জন্ম। যে-কোনও পরিস্থিতি তিনি বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা দিয়ে মোকাবিলা করতেন। তিনি কেবল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম অগ্রদূত।’

দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলো স্বামীর পাশে থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। পরিবারের দেখাশোনার পাশাপাশি স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা, দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাকে করতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব। তারই অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু হৃদয় থেকে উৎসারিত যে অলিখিত ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা ছিল স্বাধীনতার ডাক। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।‘

‘আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন নির্লোভ, নিরহংকার ও পরোপকারী। পার্থিব বিত্ত-বৈভব বা ক্ষমতার জৌলুস কখনো তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পত্নী হয়েও তিনি সবসময় সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন, গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করতেন। তিনি ছিলেন আদর্শ বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি।’

বাণীতে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ হন। জাতির ইতিহাসে সে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা আমাদের মাঝে না থাকলেও তার রেখে যাওয়া আদর্শ সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’

বাণীতে সবশেষে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’

 

Link copied!