'মদ গাঁজা ইয়াবা বৈধ, আমরা গরিব মানুষ অটো চাইলায়া খাই এইগুলা অবৈধ' আমার ছেলে ভার্সিটিতে পড়ে। এই অটো চালাইয়া খরচ চালাই। এই খরচ কি সরকার দিবো? রাজধানীর বসিলা এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান ৫০ বছর বয়সী নুরুল ইসলাম। তিন বছর ধরে এই পেশায় নিযুক্ত। ঋণ করে কেনা ব্যাটারিচালিত এই যানটি চালিয়ে চলে সংসার।
অটোরিক্সায় সংসার চলে প্রায় ১ কোটি মানুষের
সারাদেশে ৪০ লাখ এসিড ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চিহ্নিত ও অপসারণ করে বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ধরনের গাড়ি আমদানি, ক্রয় ও বিক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন উচ্চ আদালত। এই প্রসঙ্গে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার ইজিবাইক-অটোরিক্সাচালকরা। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে এই বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
গাবতলী থেকে চাঁদ উদ্যান রুটে ইজিবাইক চালান আব্দুর রহমান। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, বিদ্যুতের বিল পায়না সরকার এইটা আমাদের কি দোষ। আমরাতো প্রতিদিন ১৮০-২০০ টাকা দেই। চল্লিশ লাখ গাড়ি মানে এক কোটি মানুষের আয় রোজগার। কতো পোলাপান চুরি-ছিনতাই বাদ দিয়া গাড়ি চালাচ্ছে। এইগুলা বন্ধ কইরা দিলে আমাদের ঋণের টাকা দিয়া দিক সরকার। আমরা যেমনে পারি চলুম। গরিবের পেটে লাত্থি মারলে এই বিচার আল্লাহ করবে।
চাকরি হারিয়ে অটোরিক্সা বিকল্প পথ
সেকশান থেকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ মোড় পর্যন্ত রুটে ইজিবাইক চালান মোহাম্মদ আজিম। দীর্ঘদিন গার্মেন্টসে কাজ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণে চাকরি হারিয়ে প্রথমে ব্যাটারিচালিত রিকসা চালিয়ে চালিয়ে এক পর্যায়ে কিনে ফেলেন একটি। পুলিশের হয়রানির কারণে সেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বিক্রি করে ইজিবাইক কিনেন তিন মাস আগে। নব্বই হাজার টাকায় বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা চালিয়ে সংসার চালাই ভাই। এখনতো রাস্তায় নামা লাগবে। এছাড়া আর গতি দেখি না।
আধুনিকায়ন করে লাইসেন্স করার তাগিদ
জানতে চাইলে বরিশালে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-ইজিবাইক শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলনের নেতা বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল বিভাগের সদস্যসচিব ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা -ভ্যান-ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন,যেখানে প্রায় এক কোটির কাছাকাছি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার হিসাব চলে আসছে। সেখানে এইরকম একটা পর্যায়ে এসে আজকে যদি কোন রকম কর্মসংস্থানের প্রস্তাবনা ছাড়া এই গাড়িগুলা বন্ধ করে দেয়া হয় তবে একটা বড় জনবিস্ফোরণের মুখে সরকার পরবে৷ আমরা মনে করি এইটা খুবই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে এবং এই ধরনের সিদ্ধান্তের দিকে না গিয়ে বরং একটা আত্মকর্মসংস্থান যেটা আমাদের শ্রমিকরা সৃষ্টি করেছে সেটাকে আধুনিকায়ন করে লাইসেন্সের ব্যব্যস্থা করে একটা সমাধান করা সম্ভব।