শুল্কের বিপরীতে কী দিতে হয়েছে না জেনে প্রভাব সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না: আমীর খসরু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম

শুল্কের বিপরীতে কী দিতে হয়েছে না জেনে প্রভাব সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না: আমীর খসরু

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন শুল্ক ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা ‘সন্তোষজনক’ হিসেবে দেখেলেও এর বিপরীতে কী দিতে হয়েছে তা জানা পর্যন্ত এর প্রভাব সম্পর্কে বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শুক্রবার, ০১ আগস্ট দুপুরে গুলশানে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার পর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আমীর খসরু বলেন, ‘এটা জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় না। যে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিযোগিতায় আমরা তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি। আমরা ২০ শতাংশ, পাকিস্তান ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনামে ২০ শতাংশ, ভারত ২৫ শতাংশ।’

‘সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, সার্বিকভাবে ট্যারিফের ফিগারটা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সন্তোষজনক। ট্যারিফ বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে সেটা হয়েছে সেটা ঠিকই আছে। এটা সন্তাষজনক,’ বলেন তিনি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের নতুন এই হারের পেছনে কী আছে সে প্রসঙ্গ টেনে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী খসরু বলেন, ‘পুরো নেগোসিয়েশনের সার্বিক বিষয়টা তো আমাদের জানা নেই। আমরা শুধু ট্যারিফের বিষয়টা জানি।’

‘সার্বিক বিষয় জানার পরে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এর (শুল্কের) বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত তো এর প্রভাব কী হবে সেটা আমরা বলতে পারছি না,’ যোগ করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘নেগোসিয়েশনের পেছনের যে বিষয়গুলোএটা তো একটা প্যাকেজ। এখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু ‍ট্যারিফের কত পারসেন্ট কমানো হলো, সেটা সিদ্ধান্ত হয়নি। এ সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক আলাপ-আলোচনা, আমেরিকানরা কী পাঠাতে পারবে? বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী দাবি-দাওয়া ছিল এই বিষয়গুলো প্রকাশ হলে আমরা বুঝতে পারব।’

‘আমি বলছি, আপাতত ২০ শতাংশ ট্যারিফ নির্ধারণ অন্তত এই মুহূর্তে আমাদের রপ্তানি বাজার বাধাগ্রস্ত করবে না। সুতরাং এই মুহূর্তে এটা সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত,’ বলেন তিনি।

‘তবে এর সঙ্গে জড়িত যে বিষয়গুলো আছে সেটা আমাদের জানা নেই। সেগুলো আমরা যখন জানব তখন মন্তব্য করতে পারব,’ যোগ করেন তিনি।

সম্প্রতি বাণিজ্যসচিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার কথা বলেছেন। এটার সাথে ট্যারিফ কমানোর কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘কিছু তো করতেই হবে। কারণ আমেরিকানদের পুরো ট্যারিফের বিষয়টা পণ্য রপ্তানির স্বার্থে। সেজন্য এই অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে।’

‘কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, আমাদের অর্থনীতি কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, আমাদের ব্যবসায়ীরা কতটুকু অ্যাভজরভ করতে পারবেন, আমাদের ইকোনমি কতটুকু অ্যাবজরভ করতে পারবে, সেই বিষয়গুলো আলোচনার বিষয়। আমরা বিস্তারিত জানলে সেটার ওপর মন্তব্য করতে পারব,’ বলেন এই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের মনে রাখতে হবে, এটা শুধু ট্যারিফের বিষয় নয়। এর পেছনের আর যে বিষয়গুলো জড়িত আছে সেগুলো সম্মিলিতভাবে আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে। বিবেচনাটা গুরুত্বপূর্ণ আগামী দিনের জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আপাতত আমাদের রপ্তানিকারকরা স্বস্তি পেয়েছে বলে আমি মনে করি।’

একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের পুরো বিষয়টা খোলাসা করা উচিত। আমীর খসরু বলেন, ‘বাণিজ্য শুধু আমাদের আমেরিকার সঙ্গে নয়অন্যান্য দেশে সঙ্গেও আমাদের পণ্য রপ্তানি হয়। সেই জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে আমরা কোথায় দাড়াচ্ছি সেটা বুঝতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে।’

‘একইসঙ্গে রপ্তানি আমাদের আরও বেশি ডাইভারসিফাই করতে হবে। বিদেশে ডাইভারসিফাই করতে, দেশেও ডাইভারসিফাইআমাদের শুধু আমেরিকা নির্ভরশীল অর্থনীতি হতে পারে না। সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ,’ বলেন তিনি।

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এজন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ, অর্থনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।’

Link copied!