জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা, দাম নিয়ে অসন্তোষ ক্রেতাদের

অভিশ্রুতি শাস্ত্রী

অক্টোবর ১২, ২০২৩, ১০:৫৩ পিএম

জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা, দাম নিয়ে অসন্তোষ ক্রেতাদের

পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এখন পূজার কেনাকাটায় ব্যস্ত।

ঘনিয়ে আসছে দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসব।মহালয়ার বাকি আর মাত্র দুইদিন। তাইতো পূজার কেনাকাটায় ধুম লেগেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এখন কেনাকাটায় ব্যস্ত।

বছর ঘুরে আসা দূর্গাপূজায় সনাতন ধর্মালম্বীদের আবেগ জড়িয়ে থাকে । মহালয়া থেকে শুরু করে দশমীর পুরো জোগাড় করতে হয় বেশ আগে থেকেই। পূজার কেনাকাটায় একনামে সবাই শাঁখারী বাজারকে নির্ধারণ করে। দুর্গা প্রতিমার গহনা থেকে শুরু করে ধূপ,ধূনো, শাড়ি সব এখানেই পাওয়া যায়। তাইতো দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে ভীড় করে শাঁখারিবাজারে ।

পূজা মানেই যে শুধু কেনাকাটা তা কিন্তু নয় বরং দুর্গা মাকে বরণ করে ঘরে নেবার প্রস্তুতি।

সনাতনী নারীদের পূজার কেনাকাটার মধ্যে শাড়ি তো থাকেই। ইন্ডিয়ান মাদুরাই থেকে শুরু করে কাতান , সিল্ক সহ নানা ধরনের শাড়ি কিনতে ব্যস্ত তারা । তবে এবার দাম নিয়ে বেশ অসন্তোষ জানিয়েছেন ক্রেতারা। শাড়ি কিনতে আসা এক ক্রেতা জানান, গতবার যে শাড়ি ৫ হাজার ছিল এবার তা ছয় হাজারেরও বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। মাতৃমুখ ব্লাউজ সহ নানা ধরণের রেডিমেট ব্লাউজের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা । যেহেতু পূজার শাড়ির সঙ্গে প্রসাধনী বা ইমিকেশনের গহনা তো লাগেই। সেগুলোর  দামও বেশ চড়া । কিন্তু পূজা সামনে রেখে বাজেটের মধ্যেই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা।

বিক্রাতাদের অনেকেই বলেন, সব ধরনের বাজেটের জিনিসপত্রই আছে । তবে শাঁখারি বাজারে ইন্ডিয়া থেকে পণ্য আমদানী করাতে এবারে বেশ খানিকটা ক্ষতি ব্যাবসায়ীদেরও গুনতে হচ্ছে । বিক্রেতারা বলেন, মহাজন থেকে আগে যে পণ্য ২০০ টাকায় আনতে পারতেন এখন তা ৩০০ টাকা করে নিতে হচ্ছে । তাই দাম না বাড়িয়ে কোনো পণ্য বিক্রয় করতে পারছেন না তারা ।

সাধারণত সব মন্ডপের পূজোতেই দুর্গা প্রতিমাকে সোনার গহনা দিয়ে বরণ করা হয় । বলা যায়, সোনা ছাড়া সম্পন্ন হয় না সনাতনীদের এই দুর্গোৎসব। তবে স্বর্ণের বাজারেও যেন আগুন। যথেষ্ট স্বর্ণ দিয়ে দেবীকে ঘরে ওঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে অনেকের জন্য। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিতে হচ্ছে দেবীর জন্য কৃত্রিম গহনা ।

তাঁতি বাজারের স্বর্ণ বিক্রেতারা বলেন, অন্যান্য বাজারের তুলনায় এই বাজারে স্বর্ণের দাম অনেকটা কম । ভরি প্রতি ৯৭০০০ হাজার টাকা করে রাখা হয় । তবে এবছর এই দামও অনেকটা বেশি হয়ে গেছে তাদের ক্রেতাদের জন্য। আগের মতো ভারী গহনার অর্ডার অনেকটাই কমে গেছে । দুর্গা দেবী বরণের জন্য যে গহনার অর্ডার আসতো তা এখন নেই বললেই চলে । যৎ সামান্য সোনা কিংবা মূর্তিতে তৈরী গহনাকে রঙ করে চালিয়ে দেওয়া হয় ।

পূজা হোক নিম্নবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তের, দুর্গা দেবীকে বরণ করতে কেউই কমতি রাখতে চান না। দেবীর সম্মার্ণার্থে মহালয়ার আগেই ঘরে তুলে সাজিয়ে নেন তাকে।

সময় যেমনি যাক , উৎসবের এই মুহূর্তে পুরো বছরের সঞ্চয় দিয়ে চলবে মায়ের বরণ । তারসঙ্গে বছর ঘুরে আবার দেখা মিলবে দূর-দূরান্তে থাকা আত্মীয়স্বজনের।

পূজার আমেজ ভালো কাটুক, সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা।

Link copied!