এশিয়ায় চীনের জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় ‍যুক্তরাষ্ট্র

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৩, ২০২২, ১১:১৭ এএম

এশিয়ায় চীনের জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় ‍যুক্তরাষ্ট্র

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী কল্যাণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাপান সফরত মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেন। এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রস্তাবিত নতুন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনোমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারেটি-আইপিইএফ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম এশিয়া সফরে জাপানের রাজধানী টোকিওতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বাইডেন। ৫ দিনের এ সফরসূচির মধ্যে জাপানের পরে দক্ষিণ কোরিয়াও যাবেন তিনি।

ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ এবং অন্যান্য পারিপার্শিক কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির উপর যে বিরুপ প্রভাব পড়েছে তা মোকাবিলায় নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে চাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। যে চুক্তি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। গত অক্টোবরে ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপের বিকল্প হিসেবে নতুন এ কাঠামো দাড় করানোর প্রস্তাব করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও অর্থনৈতিক এ কাঠামোটি নিয়ে আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনা আধিপত্য থাকা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় এটা একটি নতুন প্রচেষ্টা।

২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে কাঠমোটি প্রথম আলোচনায় আসে। সেসময় ট্রাম্প প্রশাসন প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয়। বৈশ্বিক ক্ষমতাধর দেশগুলোর প্রভাব বিস্তারের রাজনীতির অংশ হিসেবে এ কাঠামো হতে পারে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে মার্কিনীদের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে এশিয়ার অর্থনৈতিক পরাশক্তি এবং মার্কিনীদের বাণিজ্য প্রতিদ্বন্দ্বি চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, এমন অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবৃদ্ধির দিকে দিয়ে ছাড়িয়ে যাবে চীন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন চুক্তির ফলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলভুক্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের কাজের পরিধি বাড়বে। যে ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে থাকবে পারস্পারিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়ন, পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ, ইন্টারনেটভিত্তিক বাণিজ্য (ডিজিটাল ট্রেড), নবায়নযোগ্য জ্বালানী, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং দুর্নীতিবিরোধী কর্মকান্ড নিয়ে একসঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে কাজ। চুক্তির আগে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এখন পর্যন্ত মার্কিন প্রস্তাবিত নতুন অর্থনৈতিক কাঠামোতে যুক্ত হতে যেসব দেশ সম্মত হয়েছে সোমবার (২৩ মে) সেসব দেশের নাম ঘোষণা দেওয়ার কথা। যদিও সমালোচকরা বলেছেন, নতুন অর্থনৈতিক কাঠামোতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে শুল্ক হার কমানোর কোন প্রস্তাব নেই। যার কারণে নতুন এই কাঠামোটি খুব একটা জনপ্রিয় হবে না এবং বাস্তবে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর অবস্থার উন্নয়নে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারবে না। 

Link copied!