জুন ১, ২০২৩, ০৭:২৫ পিএম
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট আবাসন শিল্পে সংকট তৈরি করবে জানিয়ে বাজেট পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো রিহ্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহবান জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবাসন শিল্পের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পুনর্বিবেচনার আহ্বান প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট (২০২৩-২০২৪) পুনর্বিবেচনা না করলে আগামীতে জমি এবং ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি পাবে। কারণ প্রস্তাবিত বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশন কালে উৎসে আয়কর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট,পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্লাস, সুইচ-সকেট, ক্যাবল, কিচেনওয়্যারসহ কম পক্ষে ১০-১২টি পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, যে সকল পণ্যের দাম বাড়বে তার ক্রেতা হচ্ছি আমরা যারা ফ্ল্যাট তৈরি করি। আর সব শেষ এই পন্যের দাম গিয়ে পড়বে ফ্ল্যাট ক্রেতার উপর। এই সব পণ্যের দাম সহনশীল না রাখলেআবাসন শিল্পে সংকট তৈরি হবে বলে আশংকা করছি।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের উপর ত্যাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ার রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আবাসন খাতকে রক্ষায় প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিহ্যাব জাতীয় বাজেট উপলক্ষে আবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি দাওয়া করলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার কোনটার প্রতিফলন হয়নি। বিশেষ করে অপ্রর্দশিত অর্থের বিনিয়োগ, ফ্ল্যাটের সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থা চাঙ্গা করতে পুরাতন ফ্ল্যাটে নিবন্ধন ব্যয় কমানো, বিশেষ তহবিল গঠন সহ কোন দাবির প্রতিফলন হয়নি।
রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের বেসরকারী উদ্যোক্তাদের একান্ত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা এ খাত সম্প্রতি নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। উদীয়মান এই খাতে নানা রকম কর আরোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে ক্রমে দেশের আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পতিত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশন কালে উৎসে আয়কর বৃদ্ধি, সিমেন্ট সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর উপর নতুন করে অতিরিক্ত কর আরোপ এই আবাসন খাতকে আরো সংকটের দিকে ঠেলে দিবে। বাড়তি দাম ক্রেতার উপর পড়বে এবং সবার জন্য আবাসন এই শ্লোগানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে ও অনেকের আবাসনের স্বপ্ন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
সরকারের আশু পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই সংকট উত্তরণ অসম্ভব উল্লেখ করে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, নতুন ড্যাপের ফার হ্রাসসহ নানা কারণে সমগ্র গৃহায়ন খাতে বিক্রয় পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এমনিতেই জমি এবং ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এই মুহূর্তে নতুন করে নানা পণ্যের কর বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমাদের শংকা।
আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, রিহ্যাব এর বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে ছিলাম স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার ২ হাজার কোটি টাকার উপরে রাজস্ব পেয়েছে। স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ একটা বছর রাখলে অর্থনীতিতে একটা ভালো সুফল আসবে। স্ব স্ব দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কিভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করছে।
কাজেই আমরা এই অবস্থায় যদি অপ্রদর্শিত অর্থ পাচারের সুযোগ না রেখে মূল ধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে পারি তবে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করা সহজ হবে।