রেকর্ড ৪৫৫২ প্রবাসীর মরদেহ দেশে এসেছে গত বছর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ১০:১২ এএম

রেকর্ড ৪৫৫২ প্রবাসীর মরদেহ দেশে এসেছে  গত বছর

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৪ জুন ২০২৩ তারিখে নিহত হন আলী আকবর। তার লাশ নিয়ে একটি কফিন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে পৌঁছলে পরিবারের সদস্যরা লাশ গ্রহণ করছে। আলমি স্টক ছবি।

গতবছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে রেকর্ড চার হাজার ৫৫২ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে। ২০২২ সালে এই পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৯০৪ টি মরদেহ।

সম্প্রতি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের (ডব্লিউইডব্লিউবি) এক পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করেছে ইংরেজি জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। 

স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছরই বিপুল সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক বিদেশে যান। বিশেষ করে, বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের প্রধান গন্তব্যস্থল মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু তাদের অনেককেই দেশে ফিরতে হয় লাশ হয়ে।

ডব্লিউইডব্লিউবি ১৯৯৩ সালে প্রথম এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ৫১ হাজার ৯৫৬ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে। গত ১০ বছরে এসেছে ৩৪ হাজার ৩২৩ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ।

চিত্রালংকরণ: দ্য ডেইলি স্টার (বাংলা অনলাইন)

পরিবারের দারিদ্র ঘোচাতে ২০১৯ সালে শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরব যান ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হাবিব খালাসী। কিন্তু গত বছর লাশ হয়ে দেশে ফেরেন তিনি।

রিয়াদে মেটাল-স্ক্র্যাপ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন এক সন্তানের পিতা হাবিব (৩৩)। সৌদি রাজধানীর বাইরে একটি এলাকায় পুরোনো ক্যামেল শেডে কাজ করার সময় গত ৩ মে মাথায় লোহার বড় টুকরো এসে পড়লে মৃত্যু হয় হাবিবের।

হাবিবের ছোট ভাই মাহবুব খালাসী জানান, হাবিব যখন সৌদিতে যান, তখন তার পরিবারে ব্যাপক আর্থিক সংকট ছিল। কিন্তু সৌদিতে যাওয়ার পর হাবিব যখন টাকা পাঠাতে শুরু করেন, তখন তার পরিবার ভেবেছিল তাদের টানাপোড়েন শেষ হয়েছে।

হাবিবের মৃত্যুর পর এখন তার বৃদ্ধ বাবা-মা ও নাবালক সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ডব্লিউইডব্লিউবির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে এসেছে ১৭ হাজার ৮৭১ প্রবাসী শ্রমিকের মরদেহ। এর ৬৭ দশমিক চার শতাংশই এসেছে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) আওতাভুক্ত ছয় দেশ থেকে। দেশগুলো হলো—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন।

মরদেহগুলোর মধ্যে পাঁচ হাজার ৬৬৬টি এসেছে সৌদি আরব থেকে, এক হাজার ৯১৩টি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও এক হাজার ৮৯৩টি ওমান থেকে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এক কোটি ৬০ লাখ শ্রমিকের ৭৬ দশমিক তিন শতাংশই গিয়েছেন জিসিসির ছয় দেশে।

Link copied!