পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পরবর্তী প্রধান হচ্ছেন নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট (৫৭)। জোটটির শরিকদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর তাকে মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ন্যাটোর নেতৃত্বের জন্য এগিয়ে থাকা রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস নিজের নাম প্রত্যাহার করে মার্ক রুটকে ন্যাটো জোটের প্রধান হিসেবে সমর্থন করেন।
রোমানিয়ার সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা কাউন্সিল ডাচ প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন দেওয়ায় ন্যাটোর পরবর্তী প্রধান হিসেবে নির্বাচিতের পথ সহজ হয় মার্ক রুটের জন্য।
ন্যাটোর বর্তমান মহাসচিব জেন্স স্টল্টেনবার্গের মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুলাইয়ে। তিনি নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত বছরের জুলাইয়ের তার মেয়াদ শেষ হয়। রাশিয়ার ইউক্রেনে যুদ্ধের মুখে তাকে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব দেওয়া হয়। যার মেয়াদ শেষ হবে জুলাইয়ে। এরপর স্টল্টেনবার্গের স্থলাভিষিক্ত হবেন রুট।
১৩ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকার পর ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন রুট। নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী।
জোটে অভিযোগ ওঠে, মার্ক রুট অভিবাসীদের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন। এর ফলে চার দলীয় জোট ভেঙে যায়। এরপর নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা সবচেয়ে বেশি আসন পায়। রুটে তার রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় হারের মুখে পড়েন। এরপর থেকে তিনি কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন। কারণ দক্ষিণপন্থি দল এখনও সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে।
২০২৩ সালে রুট তার অবসর ঘোষণার কথা ভুলে ন্যাটোর শীর্ষ পদে বসার ইঙ্গিত দিতে থাকেন। ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রধানদের সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকার সূত্রে তাদের আগে থেকেই চিনতেন ও জানেন রুট। রুট হলেন ইউক্রেনের একনিষ্ঠ সমর্থক। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেতেও তার অসুবিধা হয়নি। পরে ন্যাটোর অন্য সদস্য দেশও তাকে সমর্থন জানায়।
তবে হাঙ্গেরির দক্ষিণপন্থি জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সমর্থন পেতে তার কিছুটা দেরি হয়। অরবানের সঙ্গে রুটের সম্পর্ক আগে খুব একটা মধুর ছিল না। রুটকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, তিনি যতদিন ন্যাটোর নেতৃত্ব দেবেন, ততদিন হাঙ্গেরি ন্যাটোর সীমার বাইরে ইউক্রেনকে সহায়তা করবে না। অরবানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক খুব ভালো এবং তিনি ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন।
১৯৪৯ সালের ৪ জুলাই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে এর সদস্য ৩২টি। রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণের মধ্যে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে। প্রথমে সদস্যপদ লাভ করে ফিনল্যান্ড। সবশেষ তুরস্কের দীর্ঘ আপত্তি শেষে সুইডেন চলতি বছর ৮ মার্চ ন্যাটোর সদস্যপদ লাভ করে।
সূত্র: ইউরো নিউজ