ইয়াস তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ‘স্বপ্নসুন্দরী’ দিঘা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মে ২৬, ২০২১, ০৭:৩৭ পিএম

ইয়াস তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ‘স্বপ্নসুন্দরী’ দিঘা

ভারতের  'স্বপ্নসুন্দরী'  হিসেবে খ্যাত দিঘা। তবে ইয়াসের ধাক্কায় সেই দিঘাই এখন হয়ে উঠেছে ভয়ংকরী। প্রবল গতিতে ধেয়ে আছড়ে পড়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। যার ফলে সকাল থেকেই লন্ডভন্ড দিঘা। সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে দিঘার বিস্তীর্ণ এলাকা। উত্তাল সমুদ্রের জল গার্ডওয়াল টপকে ঢুকছে রাস্তায়।

প্লাবিত মন্দারমনি, তাজপুরও। রাস্তা টপকে হোটেলেও ঢুকেছে পানি। ডুবে গিয়েছে সমুদ্র সংলগ্ন দোকানগুলিও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ খালি করতে কোমরবেঁধে নেমেছে প্রশাসন। এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

ভারতীয় গণমাধ্যম  এই সময় জানায়, দিঘার সমুদ্রের এমন ভয়াল রূপ আগে কখনও দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বোল্ডার টপকে রাস্তায় চলে আসছে ঢেউ। তীব্র গতিতে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে অবিরাম বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ গার্ডওয়াল টপকে দিঘা শহরে জল ঢুকতে শুরু করে। কার্যত জলের তলায় আশপাশের দোকানগুলো ভেসে যায়। ডুবে যায় রাস্তার উপর দাঁড় করানো মোটরবাইক, গাড়ি।

আগেই দিঘা ও আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দা ও স্থানীয় হোটেল থেকে সমস্ত কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে রামনগর ২ নম্বর ব্লকের সতিলাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১১৬-বি জাতীয় সড়কে গাছ উপড়ে বিপত্তি। দ্রুত এলাকায় পৌঁছে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এনডিআরএফ।

মন্দারমণিতে বীভৎস প্রভাব দেখায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আশপাশের অধিকাংশ হোটেলগুলিতে পানি ঢুকে গেছে। রাস্তা টপকে গ্রামগুলোতেও পানি ঢুকতে শুরু করে। প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে যায় বেশ কিছু বাড়ির চাল। ক্ষতিগ্রস্থ একাধিক দোকান-বাড়ি। ল্যান্ডফলের পরই সেনা নামে এলাকা। দোকানমালিকদের জিনিসপত্র উদ্ধারে সাহায্য করতে দেখা যায় তাঁদের।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব হলদিয়াতেও দেখা গেছে। হলদি নদীতে জলোচ্ছ্বাসের জেরে জল ঢুকতে শুরু করেছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকায় জল ঢোকার আশঙ্কায় দোকানের শাটার বেঁধে রাখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সব মিলিয়ে ৫১টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩.৮৮ লক্ষ লোককে সরানো হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, উপকূলবর্তী এলাকায় ৭০ কিলোমিটার নদীবাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বহু বাঁধ ভেঙেছে। নন্দীগ্রামেও জল ঢুকে গিয়েছে। এই পরিস্থিতেও দিশা না হারিয়ে শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামলানোর বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাপ্রশাসককে।

Link copied!