পাকিস্তানেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১, ০৩:৩২ পিএম

পাকিস্তানেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

মায়ের ভাষা নিয়ে আপোষ না করায় যে দেশ বাংলার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছিলো, যারা শান্তিপূণ মিছিলে নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর গুলি ছুড়েছিল, হত্যা করেছিল তরুন-তাজা প্রাণ; সেই পাকিস্তানেও আজ উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির গর্ব-অহংকারের ‘আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস।’ ২০১৫ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন শুরু করে দেশটির দুটি সংগঠন। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই পূর্ণ মর্যাদায় পাকিস্তানে তারা পালন করছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

স্থানীয় সংবাদ সংস্থা দ্য ন্যাশনের বরাতে জানা যায়, বিশেষ এই দিনটিকে ঘিরে দেশটির বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সাহিত্য উৎসব, সভা সেমিনার আর সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাতৃভাষার গুরুত্ব তুলে ধরার প্রয়াস ব্যক্ত করেছে।

পাকিস্তানে এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্যে হিসেবে ‘শৈশবের শিক্ষা ও সংস্কৃতি থেকেই বহু ভাষার প্রতি মমত্ববোধ জাগিয়ে তোলার’ প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল কাউন্সিল অব দ্য আর্টস (পিএনসিএ) এবং ইন্ডাস কালচারাল ফোরাম (আইসিএফ) ষষ্ঠ বারের মতো সাহিত্য উৎসব আয়োজন করেছে। এ উৎসবে পাকিস্তানের অন্তত ২০টি ভাষাভাষী লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী এবং ষংস্কৃতি কর্মীরা অংশ নেবেন।

পাকিস্তানের মাতৃভাষা সুরক্ষায় অবদান রাখার জন্য বেশ কয়েক জনকে সম্মাননাও জানানো হবে এই উৎসবে। দেশটির প্রায় ৭০টি মাতৃভাষাকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ভাষার সম্প্রদায়ের মানুষদের ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হবে এই উৎসব থেকে।

এসব আয়োজনে বিশেষজ্ঞরা ভাষা ও সংস্কৃতির গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি মাতৃভাষার উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক চিন্তার সুযোগ প্রসারিত করার চেষ্টা করবেন। এছাড়া বই প্রকাশ, সাংস্কৃতিক আয়োজন, প্রদর্শনী এবং ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিও থাকবে এসব আয়োজনে।

দেশভাগের পর আজকের এই দিনে নিজেদের অধিকার আদায়ের দাবিতে বাংলার মানুষ প্রথমবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল মাতৃভাষার দাবিতে। সেদিন স্বৈও শাসকের অনুগত বাহিনীর গুলিতে ঢাকার রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছিল  পৃথিবীর ইতিহাসে ভাষার প্রতি এই অনন্য মমত্ববোধ ও আত্মত্যাগ ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ওই বছরের নভেম্বরে ইউনেস্কোর সাধারণ সভায় দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রতিবছর ভাষাবিদ্যা, ভাষার বহুত্ব এবং সাংস্কৃতিক বহুমুখিতাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্য ন্যাশন।

Link copied!