ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ১১:৩৫ এএম
সাবেক স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ চিকিৎসক লতা আক্তারকে বাঁচানো সম্ভব হলো না। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় দগ্ধ হয়ে গত সোমবার তাঁর সাবেক স্বামী খলিলুর রহমানের মৃত্যু হয়।
লতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, ডা. লতার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। শুরু থেকেই তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। চার দিনেও কোনো উন্নতি হয়নি। তাকে সারিয়ে তুলতে সম্ভাব্য সবকিছুই আমরা করছি। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না।
লতার চাচা ফারুক মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে লতার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের সব প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হবে।’
লতা আক্তার নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়ন ব্রাহ্মণেরটেক গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসক। নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর সাবেক স্বামী খলিলুর রহমান (৪০) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের আতর আলী ব্যাপারীর ছেলে।
মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তুহিন ভূঁইয়া বলেন, ‘লতার পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি, বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘খবর পেলাম, লতা ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঘটনার পরপর লতার পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।’
লতার খালু ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বেসরকারি একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন লতা। দুই বছর আগে নিজের পছন্দে তিনি খলিলুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন।
কিছুদিন পর লতা জানতে পারেন, কানাডা প্রবাসী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তার ছেলে পরিচয় দিয়ে তার সাথে প্রেম ও বিয়ে করা খলিল পেশায় একজন গাড়িচালক। বিষয়টি লতা মেনে নিতে পারেননি। তাই স্বামীকে সম্প্রতি ডিভোর্স দেন তিনি। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে খলিল লতার বাড়িতে এসে পেট্রল ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নিজেও দগ্ধ হন। এলাকাবাসী দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রোববার সন্ধ্যায় লতাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।’