জুলাই ৯, ২০২৩, ০৭:৩২ পিএম
ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সাথে বৈঠক করে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে’ লিপ্ত হয়েছেন অভিযোগ করে শাহবাগ থানায় একটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। একই অভিযোগে আরেকটি মামলার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
রবিবার বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-আইন সম্পদক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে ওই আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, “গত ৩ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ নামে তথাকথিত রাজনৈতিক দলের সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ওমরাহ করার কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গিয়ে অস্বীকৃত ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের দেশবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে করা আবেদনে বলা হয়, “মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও প্রপাগান্ডা বলে নুরুল হক নুর তা বারবার উড়িয়ে দিলেও গত ২২ জুন ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দুতাবাসে রোহিঙ্গাদের জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) খাদ্য সহায়তা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান সাংবাদিকদের অবহিত করেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। মোসাদের সঙ্গে বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। যারা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তারা নেতা হতে পারেন না’।”
আবেদনে আরও বলা হয়, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের এহেন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলে ৮ জুলাই সময় টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেন্দি এন সাফাদি স্বীকার করেন যে, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দুবাইয়ের সিটি সেন্টারের স্টার বাক্স কফি শপে তিন ঘণ্টার বৈঠক করে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন জিততে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য মেন্দি এন সাফাদির সাহায্য চান নূর।”
এতে বলা হয়, “নূর ক্ষমতায় এলে ইসরাইলের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। ইহুদিদের সমর্থন পেতে নুরুল হক নুর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন; যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য।”
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেওয়ার আগে সরকারের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন থাকায় নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা করার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এই আবেদন করেনছে আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ।
এদিকে, শুক্রবার শাহবাগ থানায় নুরের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “অভিযোগটি এখনও আমরা যাচাই বাছাই করছি। সত্যতা পাওয়া গেলে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে মামলার আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।”