৫০ কোটি মূল্যের সম্পদের মালিক আবেদ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৯, ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম

৫০ কোটি মূল্যের সম্পদের মালিক আবেদ

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) গাড়িচালক হিসেবে কাজ করে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদের মালিক বনে গেছেন সৈয়দ আবেদ আলী। ঢাকায় বানিয়েছেন ছয়তলা বাড়ি, কিনেছেন তিনটি ফ্ল্যাট ও একটি গাড়ি। গ্রামে বানিয়েছেন ইউরোপীয় ধাঁচের আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। গতকাল সোমবার গ্রেপ্তারের পর সিআইডিকে দেওয়া প্রাথমিক জবানবন্দিতে চোখ কপালে ওঠার মতো এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও সম্পদ থাকতে পারে তার।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে মিরপুর থানার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডে গিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদপত্রে বলা হয়, ‘বিসমিল্লাহ টাওয়ার’ নামে একটি নয়তলা ভবনে পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আবেদ আলীর থাকার তথ্য জানান নিরাপত্তাকর্মী সোহেল খান। বাড়িটিতে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেননি তার পরিবার। ভবনটির পঞ্চম তলায় যাওয়ার অনুরোধ নিয়ে গেলে নিরাপত্তাকর্মী সোহেল ইন্টারকমে আবেদ আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলা শেষ হলে নিরাপত্তাকর্মী জানান, আবেদ আলী তার বাসায় সাংবাদিকদের ঢুকতে দিতে চান না।

এদিকে এলাকার বাসিন্দারা দাবি করছেন, ভবনটিতে আবেদ আলীর ফ্ল্যাট ছিল পাঁচটি। মাসখানেক হলো দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন রয়েছে তিনটি। বিষয়টি নিশ্চিত করে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, শেওড়াপাড়ার ভবনটির পঞ্চম তলায় দুটি ও চতুর্থ তলায় একটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। পাইকপাড়ায় তার একটি ছয়তলা বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকে তার নগদ টাকা রয়েছে।”

জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী জানান, গত বছরের শেষের দিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ৩ হাজার ১০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের অনেকের কাছে ফাঁস করা প্রশ্ন বিক্রি করেছেন ও তাদের চাকরিও হয়েছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, সৈয়দ আবেদ আলী পিএসসিতে চাকরি নিয়েছিলেন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে। তার বাড়ি মাদারীপুরে। তবে চাকরির সময় নিজেকে সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পিএসসির চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

দুই বছর আগে থেকে আবেদ আলী মাদারীপুরের ডাসারে তার নিজ এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন। নতুন উপজেলা ডাসারের চেয়ারম্যান হওয়ার মনোবাঞ্ছা রয়েছে তার। এই নির্বাচনের তফসিল এখনও না হলেও প্রার্থী হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন প্রচার করে আসছেন। এলাকায় দামি গাড়িতে চড়ে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে তাকে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রেলওয়ের ‘উপ-সহকারী প্রকৌশলী’ পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডের নিজ ফ্ল্যাট থেকে সৈয়দ আবেদ আলী ও তার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান ওরফে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া পিএসসির দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ আরও ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে বিপিএসসি আইনে মামলা করেন সিআইডির এক কর্মকর্তা। একই দিন দুর্নীতি-কাণ্ডে ফেসবুক সয়লাব হওয়ায় আবেদ আলীর ছেলে সোহানুর রহমানকে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Link copied!