বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমরা বিশ্বে অহংকারের জাতি: নৌ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৬, ২০২১, ০৮:৩৪ পিএম

বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমরা বিশ্বে অহংকারের জাতি: নৌ প্রতিমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করায় বাঙালি জাতি বিশ্বে অহংকারের জাতিতে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই আমাদের পথ চলতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেছে বলেই, আজকে বাংলাদেশ আলোকবর্তিকা হিসেবে সমগ্র পৃথিবীতে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা, সাফল্য ও সাম্প্রতিক অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেছেন। এদিন মতিঝিলের বিআইডব্লিউটিএ ভবনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উদ্বোধনও করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়; সমগ্র পৃথিবীর জন্য প্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে  প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অমর্ত্য সেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মতাদর্শ এখনো পৃথিবীর জন্য প্রাসঙ্গিক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান, বঙ্গবন্ধু দেখিয়ে দিয়েছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হওয়ার পরেও একটি রাষ্ট্র কীভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে আমরা কখনোই এগিয়ে যেতে পারব না। এটা প্রমাণিত হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী যে সরকারগুলো দেশ পরিচালিত করেছে, দেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারের দিকে চলে গিয়েছে। 

সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী একাত্তরেও ছিল, এখনো আছে তবে তারা শক্তিশালী নয়— এমন মন্তব্য করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সামগ্রিক চিন্তাটা করেছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি যেমন এক জয়গায় বলেছেন, ছয় দফা দিয়েছি, এটা এক দফায় পরিণত হবে। কীভাবে করবেন, সেটা তিনি জানেন। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তখনো ছিল। সেই সময়েও মুক্তিযুদ্ধকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অনেক ধরনের কর্মকাণ্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সংগঠিত, বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ভাবনার সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে, সেজন্য সেই ষড়যন্ত্র করে কেউ ফাটল ধরাতে পারেনি। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কাজেই আজকেও সেই যে জায়গাটা এখনো আছে। তবে তারা খুব শক্তিশালী নয়। 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, শক্তিশালী নয় কীভাবে বলি, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর নামটা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জয়বাংলা স্লোগানটা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ৭ মার্চের ভাষণের ব্যাপারে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, এটার কোন প্রয়োজন নাই। এটা প্রাসঙ্গিক না। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উল্টো তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। এবং একুশ বছর, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া- এই তিনজনই বাংলাদেশকে উল্টোপথে পরিচালিত করেছে। বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাতে গিয়ে অনেক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাই,’ এ স্লোগান দিতে গিয়ে অনেকের জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনীদেরকে দিয়ে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করানো হয়েছিল। একটা রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছিল। এবং তাদেরকে সংসদে আনা হয়েছে। ভোটারবিহীন নির্বাচনে সংসদ নেতা বানানো হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা যায়নি। কারণ বঙ্গবন্ধু মানেইতো বাংলাদেশ।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে এম তরিকুল ইসলাম ও নৌ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এ জেড এম জালাল উদ্দিন।

Link copied!