ছাগলবন্ধুর মৃত্যুতে তার এতিম ছানাদের মায়ের দায়িত্ব নিয়েছে কুকুর!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৫, ২০২২, ০৪:৩৫ পিএম

ছাগলবন্ধুর মৃত্যুতে তার এতিম ছানাদের মায়ের দায়িত্ব নিয়েছে কুকুর!

শান্তভাবে কুকুরটা দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎই তার দিকে লেজ নাড়তে নাড়তে ছুটে এল দুটো সদ্যোজাত ছাগলছানা! তারপর ওরা মা কুকুরটির স্তনে দিল ডুব। কুকুরটাকে দেখা গেল মাতৃস্নেহে তাদের দুধ খাওয়াতে! এমনই অভূতপূর্ব দৃশ্যের দেখা মিলল পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডাল থানার জামবাদ কোলিয়াড়ি এলাকায়। সেই দৃশ্য দেখে তাদের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, এক ‘অসম’ বন্ধুতার গল্প। মায়ের ব্যথার কাহিনি।

ওই বাড়ি মালিক প্রভাত বাউড়ি জানালেন, তাদের কুকুরের নাম জুলি। একটি ছাগলও ছিল তাদের বাড়িতে। দু’জনেরই খুব বন্ধুত্ব ছিল। মাস কয়েক আগে চারটি সন্তান প্রসব করে জুলি। কিছু দিন পর তার ছাগল-বন্ধুও সন্তানসম্ভবা হয়। তার দুটো বাচ্চা হয়। কিন্তু অসুখের কারণে কুকুরের একটি বাচ্চাকেও বাঁচানো যায়নি।

দিন কয়েক আগে রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় মারা যায় মা-ছাগলটি। তার পর যেন তার ছেড়ে যাওয়া বাচ্চার দায়িত্ব নিজে তুলে নিয়েছে জুলি। তাদের দুধ খাওয়ানো থেকে চোখে চোখে রাখা, সবটাই সে করছে। যেন এক দিকে বন্ধুবিয়োগের পর তার সদ্যোজাতদের প্রতি কর্তব্যবোধ, অন্য দিকে, নিজের মাতৃত্বের সাধ সে এ ভাবেই নিচ্ছে।

এখন কুকুরটির সাথেই থাকছে এই দুই ছাগশিশু। তার সাথেই থাকা, খাওয়া এবং ঘুম। এই দৃশ্য দেখে চোখে জল ধরে রাখতে পারলেন না উপস্থিত এক নারী। তিনি বললেন, ‘‘ওকে দেখে মায়ের ব্যথা বুঝি। আমার নিজের ছেলে ছ’মাস আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। ওদের দেখে আমার মনে হল মায়েদের যন্ত্রণা একই রকম। মানুষ হোক বা জানোয়ার, কোনও মা-ই যেন ব্যথা না পায়।’’

আর প্রভাত বাউড়ির কথায়, ‘‘বন্ধুত্বের উদাহরণ এমনই। ছাগলের মৃত্যুর পর ও (জুলি) এত ব্যথা পেয়েছে, তার বাচ্চাদের নিজে বড় করার চেষ্টা করছে।’’

সূত্র: আনন্দবাজার

Link copied!