জানুয়ারি ২৫, ২০২৪, ১২:০১ পিএম
জাতীয় পার্টিকে নিজের সম্পত্তি মনে করে অনেকটা মুদী দোকানের মত ব্যবহার করেছে দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি সকালে এসে সন্ধ্যায় অফিস থেকে বের হতেন। আর তাকে লাটিমের মত ঘুরাচ্ছে অনেকেই। জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে গণপদত্যাগ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সুনীল শুভ রায়সহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দের দাবি, প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী গণপদত্যাগ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, “সত্যি কথা এ দলে বলা যায় না। সত্যি কথা বললে এ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আমরা আজকে উনাকেই বাদ দিয়ে দিব। আমরা আবার জাতীয় পার্টির দুর্গ গড়ে তুলবো।”
জাতীয় ছাত্রসমাজের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সিরাজুল ইসলাম বলেন, “মুজিবুল হক চুন্নু দলকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা রওশন এরশাদ, সাদ এরশাদকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করে দিয়েছে। এরশাদ পরিবারকে মাইনাস করে জাতীয় পার্টির রাজনীতি হবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম পাঠান বলেন, “জাতীয় পার্টিতে বর্তমানে যিনি চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত আছেন সেই জিএম কাদের এক বছর আগে থেকেই বলে আসছেন, জাতীয় পার্টি একক ভাবে নির্বাচন করবে। সেই ভাবে তিনি বক্তৃতা, বিবৃতি এবং মিডিয়ায় কথা বলে এসেছেন। শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। আর সমঝোতা করে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ মাত্র ১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে এমপি হয়ে এসেছেন।”
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, “চেয়ারম্যান জি এম কাদের পার্টির নেতা কর্মীদের প্রতিবাদের ভাষা বুঝতে না পেরে প্রতিহিংসাবশত পার্টির কো চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সংগ্রামী আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরীকে পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এছাড়াও কয়েকজন নেতাকে মৌখিক ভাবে অব্যাহতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন।”
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, “আমরা এরশাদ প্রেমিক নেতা কর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যস্ত সংগঠনে অবস্থান করে প্রাণপ্রিয় নেতা পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণপদত্যাগের ঘোষণা করছি। একই সাথে আপনাদের কাছে এই অঙ্গীকারও করে রাখছি, অল্প সময়ের ব্যবধানে আমরা পল্লীবন্ধু এরশাদের চেতনা, প্রেরণা, নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবো।”